বিশেষ প্রতিনিধিঃ

ঝিনাইদহ শহরের পাড়ায় পাড়ায় ব্যভিচারের পাশাপাশি যুবতী নারী দিয়ে প্রতারণার ফাঁদ পাতা হচ্ছে। মোবাইলে প্রেমের অভিনয় করে টাকা দাবি করা হচ্ছে। টাকা না দিলে যুবতীর সঙ্গে নগ্ন করে ছবি উঠিয়ে ফাঁস করার হুমকি দেয়া হচ্ছে।

এ রকম একটি চক্রের ৭ সদস্যকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এরমধ্যে রয়েছে ৫ জন যুবতী নারী। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, শৈলকূপা উপজেলার বাহির রয়েরা গ্রামের নিজাম উদ্দিনের মেয়ে তন্বী (২৫), ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের আড়মুখী গ্রামের আলাউদ্দিনের মেয়ে সুমী (২৪), নলডাঙ্গা ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের প্রফুল্ল কুমারের ছেলে শ্রী প্রদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস (৩০), ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের মায়াধরপুর গ্রামের আফান উদ্দিনের ছেলে রাসেল হোসেন (২৫), কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নের লেবুতলা গ্রামের খেলাফত মালিথার মেয়ে ইতি খাতুন (২২), ঝিনাইদহ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের ছোট কামারকুণ্ডু গ্রামের সাগরের স্ত্রী লাবনী খাতুন (২০) ও নলডাঙ্গা ইউনিয়নের নলডাঙ্গা গ্রামের মৃত হারুনের স্ত্রী সোহানা (২৫)।

জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হাট গোপালপুর গ্রামের সমশের মণ্ডলের ছেলে আনিচ মণ্ডলের সঙ্গে মোবাইলে পরিচয়ের সুত্র ধরে শৈলকূপা উপজেলার বাহির রয়েরা গ্রামের নিজাম উদ্দিনের মেয়ে তন্বীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই মোতাবেক তন্বী আনিসের নিকট অসুস্থতার কথা বলে ৫ হাজার টাকা চাই।আনিচ তাকে ২ হাজার টাকা দিতে রাজি হয়। তন্বী আনিচকে শহরের ব্যাপারীপাড়ায় আড়মুখী গ্রামের আলাউদ্দিনের মেয়ে সুমীর ভাড়া বাড়িতে আসতে বলে। আনিচ ৩১ শে জুলাই বিকালে ২ হাজার টাকা নিয়ে তন্বীর কথামতো সুমীর ভাড়া বাসায় গিয়ে দরজায় নক করে। ভেতর থেকে সুমী দরজা খুলে দিলে আনিচ এবং তন্বী বাসার ওয়েটিং রুমে বসে।

এ সময় নলডাঙ্গা ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের প্রফুল্ল কুমারের ছেলে শ্রী প্রদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস সুমীর পাশের রুম থেকে বেরিয়ে এসে আনিচকে ফাঁদে ফেলে দেয়। দাবি করে ৫০ হাজার টাকা। টাকা না দিলে তন্বীর সঙ্গে আনিচের উলঙ্গ ছবি তুলে ইয়াবা দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেবার হুমকি দেয়। এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে তন্বী কাপড় খুলে অর্ধ নগ্ন হয়ে পড়ে। আনিচ তাদেরকে টাকা দিতে অস্বীকার করলে তন্বী, সুমী ও শ্রী প্রদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস তাকে মারধর করে। আনিচ বাধ্য হয়ে তার মায়ের কাছে ফোন করে ১৫ হাজার টাকা বিকাশ করতে বলে। আনিচের মা হাটগোপালপুর বাজারে এসে তন্বীর বিকাশ নম্বরে ১৫ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেয়।

স্থানীয় লোকজন তন্বী, সুমী ও শ্রী প্রদ্যুৎ কুমারের কবল হতে আনিচকে উদ্ধার করে। ঘটনাটি পুলিশ জানতে পেরে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে। এদিকে গত রোববার রাত ৯টার দিকে ঝিনাইদহ শহরের আলহেলা পাড়া থেকে রাসেল হোসেন, ইতি খাতুন ও লাবনী খাতুনকে গ্রেপ্তার করে। তারা বাসা ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক কাজ চালিয়ে আসছিল। এভাবে শহরের বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় চলছে অসামাজিক কর্মকাণ্ড। যার বেশির ভাগ পুলিশের অগোচরে চলছে। এক শ্রেণির টাউট বাটপাড় ও প্রতারক শ্রেণির মানুষ এসব অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকলেও তারা থাকছে ধরাছোয়ার বাইরে।

বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, এ ধরনের কাজকর্ম করে এক শ্রেণির মানুষ যুব সমাজকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here