ইনসেটে নিহত লিয়াকত হোসেন বল্টু ও আলমগীর খান বাবু।

বিশেষ প্রতিনিধিঃ

পৌরসভা ভোটের আর মাত্র ২ দিন বাকি। এরই মধ্যে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ঝিনাইদহের শৈলকুপা পৌরসভার নির্বাচনী পরিবেশ। একই রাতে এক কাউন্সিলর প্রার্থীর ভাইকে কুপিয়ে হত্যা ও এর প্রায় ৪ ঘন্টা পর একই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীর ডুবন্ত লাশ উদ্ধার।

নিহতরা হলেন, শৈলকুপা পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী শওকত হোসেনের ভাই ও উপজেলার উমেদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক লিয়াকত হোসেন বল্টু (৫০) ও একই ওয়ার্ডের পাঞ্জাবী প্রতিকের কাউন্সিলর প্রার্থী আলমগীর খান বাবু (৫২)। তিনি কবিরপুর গ্রামের জালাল খানের ছেলে।

স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, বুধবার রাত ৮ টার দিকে শৈলকুপা পৌর এলাকার কবিরপুর এলাকায় ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী শওকত হোসেন ও তার ছোট ভাই আওয়ামী লীগ নেতা লিয়াকত হোসেন ভোট প্রার্থনা করতে যান। এ সময় পাঞ্জাবি প্রতিকের প্রার্থী আলমগীর খান বাবুর সমর্থকরা তাদের উপর হামলা করে। এসময় উভয় গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে লিয়াকত হোসেন বল্টুসহ ৫ জন আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া সদর হাসাপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে রাত ৯ টার দিকে লিয়াকত হোসেন বল্টুর মৃত্যু হয়।

নিহতের ভাই কাউন্সিলর প্রার্থী শওকত হোসেন সাংবাদিকদের জানান, পাঞ্জাবি প্রতিকের প্রার্থী আলমগীর খান বাবুর সমর্থকরা তার ভাইকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছেন।

সংঘর্ষে কাউন্সিলর প্রার্থী শওকত হোসেনের ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনার পরপরই আত্মগোপনে চলে যান প্রতিদ্বন্দি পাঞ্জাবি প্রতিকের প্রার্থী আলমগীর খান বাবু। এর প্রায় ৪ ঘন্টা পর শৈলকুপার দেবতলা এলাকার কুমার নদ থেকে পানিতে ভেসে থাকা অবস্থায় আলমগীর খান বাবুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনিও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

নিহত কাউন্সিলর প্রার্থী আলমগীর খান বাবুর স্বজনদের আহাজারি।

নিহত কাউন্সিলর প্রার্থী আলমগীর খান বাবুর স্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা বলেন, সর্বশেষ বুধবার রাত ১০ টার দিকে তার স্বামীর সাথে মোবাইলে কথা হয়। এসময় তার স্বামী দেবতলা এলাকায় নদীর ধার দিয়ে নিরাপদ স্থানে যাচ্ছিলেন।

শৈলকুপা থানার এসআই আমিরুজ্জামান জানান, ধারণা করা হচ্ছে কাউন্সিলর প্রার্থী আলমগীর খান বাবুর মৃত্যু স্বাভাবিকভাবেই হয়েছে। নদী পার হওয়ার সময় হার্ট এ্যাটাকে তার মৃত্যু হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার সাঈদ বলেন, বুধবার রাতে শৈলকুপা পৌরসভা নির্বাচনের কাউন্সিলর প্রার্থী শওকত হোসেন ও আলমগীর খান বাবুর সমর্থদের মধ্যে সংঘর্ষে এক প্রার্থীর ভাই লিয়াকত হোসেন নিহত হয়। এরপর রাতেই স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আলমগীর খান বাবুর মরদেহ দেবতলা এলাকার কুমার নদ থেকে উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের পর কাউন্সিলর প্রার্থী আলমগীর খান বাবুর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে বলে জানান তিনি।

এদিকে জেলা নির্বাচন অফিসার রোকুনুজ্জামান জানান, জোড়া খুনের ঘটনায় নির্বাচন বন্ধ হবে না। শুধু ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে নির্বাচন হবে না।

শৈলকুপা পৌরসভা নির্বাচন ১৬ জানুয়ারি। বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে প্রচার-প্রচারণা শেষ হচ্ছে। দুই ব্যক্তি নিহত হওয়ার ঘটনায় এখন এলাকায় টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here