নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

দেশ স্বাধীনের পর থেকে একটি পাকা রাস্তার স্বপ্ন দেখছেন ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার ২ নং জামাল ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের তৈলকূপী গ্রামবাসী। আজও তাদের স্বপ্ন, স্বপ্নই রয়ে গেছে। মহান স্বাধীনতার পর থেকে তাদের অনেক জনপ্রতিনিধিই একটি পাকা রাস্তার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত তাদের স্বপ্ন পূরনের জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। সংসদ নির্বাচন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিরা তাদের রাস্তাটি কাচাঁ রাস্তা থেকে পিচ রাস্তায় উন্নতি করবেন বলে আশ্বস্ত করেন। কিন্তু নির্বাচনের পর আর কোন জনপ্রতিনিধি এই গ্রামের রাস্তাটির দিকে নজর দেয় না বলে অভিযোগ করেন গ্রামবাসী।

তারা জানান, আমাদের গ্রামের যোগাযোগের একটি মাত্র রাস্তা। যে রাস্তা দিয়ে আমরা নলডাঙ্গা বাজারসহ কালীগঞ্জ এবং জেলা শহর ঝিনাইদহে যেতে হয়। স্বাধীনতার পর থেকে এই গ্রামের রাস্তার উন্নয়ন বলতে আমরা দেখেছি বহু বছর আগে একবার রাস্তায় মাটি ফেলতে এবং গত-২০১৭ সালে নন্দদুলালের বাড়ি থেকে তৈলকূপী প্রাইমারি স্কুল পর্যন্ত নি¤œ মানের ইটের সলিং করা হয়। কিন্তু বর্ষা মৌসুম আসতে না আসতেই সে সব ইট উঠে বড় বড় খানা খন্দের সৃষ্টি হয়ে বর্তমানে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

গ্রামের একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম ও গ্রামবাসী যাতায়াতের রাস্তাটি প্রায় ৫০ বছর ধরে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি, উল্টে বেড়েছে জনদুর্ভোগ। ১০ হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তয় প্রতিদিন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গ্রামবাসীকে। জানা যায়, বর্তমান সরকারের বিভিন্ন জেলা উপজেলা উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও লাগেনি তৈলকূপী গ্রামের রাস্তাটিতে।

এ রাস্তা দিয়ে গ্রামের শিক্ষার্থীরা বর্ষা মৌসুমে দুটি কাপড় নিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসতে হয়, একটি কাপড় কাঁদায় নষ্ট হয়ে যায় আরেকটি কাপড় পড়ে বিদ্যালয়ে ক্লাস করেন শিক্ষার্থীরা। তৈলকূপী গ্রাম থেকে উপজেলা শহরে যাওয়ার সহজ রাস্তাটি হলো বেগবতি নদির গোয়ালবাড়ি ঘাট পার হওয়া। সেখানেও নেই একটি ব্রিজ তাই গ্রামবাসী গোয়লবাড়ি ঘাটের বেগবতি নদির উপর একটি সেতুর দাবি জানিয়েছেন। ইতিমধ্যে অনেক অসূস্থ মানুষ দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে না নিয়ে যেতে না পারায় মৃত্যু বরন করেছেন।

উপজেলার সকল গ্রামের অবকাঠামো উন্নয়নে বিশেষ কোনো বরাদ্দ দিয়ে কাজ চললেও এ রাস্তার বরাদ্দ না পাওয়ায় স্থানীয় দায়িত্বশীলদের অযোগ্যতাও দায়ী বলে অভিযোগ করেন গ্রামবাসিরা। প্রায় আড়াই কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ভাঙ্গা ও কাঁচা রাস্তার কারণে প্রতিদিন যাতায়াতে কষ্ট হয় সাধারন গ্রামবাসির।

একটু বৃষ্টি হলেই হয় জলাবদ্ধতা। বিশেষ করে বৈশাখ মাসে ধান তোলার সময় দুর্ভোগের শিকার হয় কৃষকেরা। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা সহ উচ্চ বিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থীরা এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয়। সড়কে কোন গাড়ি না চলাতে গ্রামবাসীরা আছেন চরম দুর্ভোগে।

গ্রামবাসিরা আরো জানান, আমাদের গ্রামে বর্তমান অনেক প্রভাবশালী লোকও আছে তারা কাঁচা রাস্তাটির কারনে জনদুর্ভোগ দেখেও এড়িয়ে যায়। বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধরা উক্ত রাস্তা পাকা করে দিবে বলে আশ্বাস দিলেও আজও পর্যন্ত সেই কাজটি করেননি। এইগুলো সংস্কারে এবং নাগরিক সুবিধা দিতে সরকারের কাছ থেকে যে সহযোগিতা প্রয়োজন, তা পাওয়া যাচ্ছে না। তারা বলেন আমাদের ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মতিয়ার রহমান মতির কথা বলে লাভ নেই তিনি প্রত্যেকবার রাস্তার কাজ করাবেন বলেন, কিন্তু নির্বাচনে জয়লাভ করার পর আর উনাকে খোঁজে পাওয়া যায় না। গ্রামবাসির উদ্যােগে বার বার বরাদ্দের জন্য চেষ্টা করা হলেও কোন অদৃশ্যর কারনে তা বরাদ্ধ পাওয়া যাচ্ছেনা। তারা আরো বলেন, বহু বছর পর স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের প্রচেষ্টায় এবার এ গ্রামটিতে বিদ্যুতের আওতায় আনেন। গ্রামবাসীরা মনে করেন এই জনবান্ধব সাংসদই তাদের গ্রামের রাস্তাগুলো পিচের রাস্তা করে পাকা করন করবেন।

স্থানীয় সরকার সহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তর, স্থানীয় সাংসদ ও জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহবান কাঁচা রাস্তাটি পাঁকাপোক্ত করে গ্রামবাসিকে জনদুর্ভোগেরর হাত থেকে রক্ষা করবেন এমনটিই আশা করেন তৈলকূপী গ্রামবাসী।

এ ব্যাপারে ২ নং জামাল ইউপি চেয়ারম্যান মোদাচ্ছের হোসেন মন্ডল জানান, এতদিন এই রাস্তার কোন আইডি না থাকার কারনে রাস্তাটি পাকা করন সম্ভব হয়নি। খুব দ্রুত তৈলকুপী গ্রামের সকল রাস্তা পিচের রাস্তা করা হবে। আমি দু’য়েক সপ্তার ভিতর তৈলকূপী গ্রামের সকল রাস্তা আইডি অন্তভূক্তি করবো। তাছাড়া বর্তমান আ’লীগ সরকার জনবান্ধব সরকার, এই সরকারের আমলে প্রত্যন্ত অঞ্চল উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে ইনশাআল্লাহ্ অতি শীঘ্রই এই গ্রামের কাঁচা রাস্তাগুলো পাকা করন করা হবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here