নড়াইলঃ

সন্তানরা জমি লিখে নিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া নড়াইলের সেই মায়া রাণী কুন্ডু’র (৮৫) পাশে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসন।

শুক্রবার রাতে নড়াইলের জেলা প্রশাসক আনজুমান আরার নির্দেশে ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এর আগে তাকে নিয়ে অনলাইন নিউজপোর্টাল সবুজদেশ নিউজ ডটকম এ বৃদ্ধা মাকে বের করে দিল সন্তানরা, নৌকার তলে কাটছে দিন-রাত শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলা প্রশাসনের নজরে আসে।

শনিবার দুপুর ১২টার দিকে নড়াইল সদর হাসপাতালে বৃদ্ধা মায়া রাণী কুন্ডুকে দেখতে যান জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা। এ সময় সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. মশিউর রহমান বাবু, সহকারী কমিশনার (ভূমি) কৃষ্ণা রায়সহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা বলেন, কোনো মাকে কেউ যদি এমন আচরণ করে ঘর থেকে বের করে দেয় তাহলে তাকে ছাড় দেয়া হবে না। আইনের আশ্রয় নেয়া হবে। আমরা এই বৃদ্ধা মায়ের পাশে আছি। তার চিকিৎসা শেষে যেটা ভালো হয় সেটা করা হবে।

প্রসঙ্গত, নড়াইল শহরের কুড়িগ্রাম এলাকার বাসিন্দা মৃত কালিপদ কুন্ডুর স্ত্রী মায়া রাণী কুন্ডুকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন তার বড় ছেলে দেব কুন্ডু (৫০)।

কয়েক বছর আগে ছোট ছেলে উত্তম কুন্ডু (৪০) বিয়ে করে অন্য জায়গায় বসবাস করায় বড় ছেলে দেব কুন্ডু তার মাকে দেখভাল করছিলেন। তিনি শহরের রূপগঞ্জ বাজারের বাঁধাঘাট এলাকায় থাকেন।

এর মধ্যে গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে দেব কুন্ডু তার মায়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করেন। পাশাপাশি তার খেতে-পরতে এবং থাকতে দিতে অপারগতা প্রকাশ করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এমন ঘটনা দেখে স্থানীয় অমিত সাহা নামে এক ব্যক্তি ওই বৃদ্ধা মাকে কয়েক মাস তার বাড়ি রাখেন।

মায়া রাণী কুন্ডু কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, দীর্ঘ দেড় বছরের বেশি সময় ছেলে ও ছেলের বউ তাকে খেতে পরতে ও থাকতে দেয় না। তার ৫ শতকের একটি জমি ছিল। সেই জমি কয়েক লাখ টাকায় বিক্রি করেছে বড় ছেলে দেব কুন্ডু। এরপর থেকে তারা খুব দুর্ব্যবহার করে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। এখন আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। স্থানীয়রা যা খেতে দেয় তাই খাই। সর্বশেষ ১২ দিন ধরে এসএম সুলতান কমপ্লেক্স সংলগ্ন চিত্রা নদীর পাড়ে রক্ষিত শিল্পী সুলতানের নৌকা শিশুস্বর্গের নিচে তিনি আশ্রয় নেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here