বিশেষ প্রতিনিধি:

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় মেহগনি বাগানে একদিন বয়সের এক কন্যা নবজাতককে উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর নবজাতকের চিকিৎসার জন্য কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়।

নবজাতক সুস্থ আছে বা কি ধরনের সমস্যা আছে এ ব্যাপারে জানতে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যায় উপজেলার কর্মরত সাংবাদিকরা। এ সময় জরুরি বিভাগ থেকে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছে যেতে বলা হয়।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামীমা শিরিন লুবনা সাংবাদিকদের জানান, তথ্য অধিকারের উপর নতুন নোটিশ এসেছে মন্ত্রণালয় থেকে। নোটিশের বাইরে আমরা কোন কাজ করতে পারবো না। আপনারা স্বাক্ষর করে তথ্য নিবেন। আমরা সেটি রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করে রাখবো। যে এই তথ্য আমরা অমুক তারিখে ওই পত্রিকার সাংবাদিককে দিয়েছি। এখন একদম রেজিস্ট্রার করে আমরা তথ্য দিচ্ছি।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত বেসরকারি টিভি চ্যানেল একাত্তর টেলিভিশনের কালীগঞ্জ উপজেলা সংবাদদাতা মিশন আলী জানান, নবজাতক উদ্ধারের পর তার শারিরীক সমস্যা আছে কিনা এমন তথ্য জানতে চাওয়া হয় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছে। তিনি তথ্য অধিকারে আবেদন ও স্বাক্ষর করে তথ্য নিতে বলেন। এটি আসলেই দুঃখজনক। নবজাতকের শারিরীক অবস্থা সম্পর্কে জানতে কেন তথ্য অধিকারের আবেদন করতে হবে এটি আমার বোধগম্য নয়। এমন কোন আইন আছে কিনা আমার জানা নাই।

কালীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি জামির হোসেন জানান, একটি বাগানে পাওয়া নবজাতকের চিকিৎসার ব্যাপারে সাংবাদিকরা তথ্য নিতে গেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তথ্য অধিকারের যে কথা বলেছেন সেটি অমানবিক। একটা নবজাতকের তথ্যের জন্য কেন তথ্য অধিকারে আবেদন করতে হবে? আর কেনই বা স্বাক্ষর করতে হবে?

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া জেরিন জানান, তথ্য অধিকার আইন আছে। জনগণের তথ্য সুরক্ষার জন্য আইন রয়েছে। তবে নবজাতকের ব্যাপারে তাদের কোন ইন্টার্নাল বিষয় আছে কিনা আমার জানা নাই।

উল্লেখ্য, রোবার দুপুরের দিকে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার শিবনগর এলাকার একটি মেহগনি বাগান থেকে নবজাতককে উদ্ধার করেছে পুলিশ। কন্যা নবজাতকটি জীবিত অবস্থায় পাওয়া যায়। এরপর তার চিকিৎসার জন্য কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।

এর আগে, গত ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বরে সবুজদেশ নিউজ সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে করোনায় হোটেলে না থেকেও চিকিৎসকদের বিল ৫৭৬০০ টাকা শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামীমা শিরিন লুবনার বিরুদ্ধে করোনাকালীন চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের বরাদ্দের টাকা ভ‚য়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি।

এর সত্যতা পাওয়ার প্রতিবেদনটি পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (প্রশাসন) দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

এছাড়াও কালীগঞ্জ উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান লাড্ডু সাথে দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদে শহরে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঝাড়ু ও জুতা প্রদর্শন করে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে স্মারকলিপিও প্রদান করা হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here