বাগেরহাটঃ

ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকায় প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গুলি বিনিময়ের ঘটনায় স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ অন্তত ৭৩ জন আহত হয়েছে। আহতদের সংশ্লিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বাগেরহাট সদর হাসপাতাল ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এধরণের সংঘর্ষ এড়াতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী মোঃ সজিব তরফদার ও অহেদ মোস্তফা বাপ্পি শেখের সমর্থকদের মাঝে গুলি বিনিময়েল ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১৬ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এর মধ্যে অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় উভয় পক্ষের ৭ জনকে খুলনা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।বাকিরা বাগেরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ঘটনায় শুক্রবার ভোরে ডেমা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান তরফদার মকবুল (৭১), জসি মল্লিক (২৬), মল্লিক সুজাউদ্দৌলা রচি (৪০) ও মকবুল চেয়ারম্যানের মেয়েকে মাকসুরা আক্তার (৩৫) কে আটক করেছে পুলিশ। মকবুল চেয়ারম্যানের ব্যবহৃত একটি বন্দুক জেব্দ করেছে বাগেরহাট সদর থানা পুলিশ।

অন্যদিকে বাগেরহাটের শরনখোলায় ইউপি সদস্য প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে পৃথক দুটি সংঘর্ষে নারীসহ অন্তত ৪২জন আহত হয়েছেন । শুক্রবার (১৯ মার্চ) বেলা ১১ টায় শরনখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী জাহাঙ্গীর হোসেনের সভায় হামলা চালায় বর্তমান ইউপি সদস্য ডালিমের সমর্থকরা। এতে ৪ নারীসহ ৪২ জন আহত হয়।

এছাড়া একই ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য প্রার্থী আলামিনের মিছিল থেকে বর্তমান ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম হালিমের সমর্থকদের উপর ইটপাটকেল ছোড়ে। এসময় উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে উভয় পক্ষের ৭ নারীসহ ২০ জন আহত হয়েছে। আহতদের শরনখোলায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ফের সংঘর্ষ এড়াতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)মোঃ সাইদুর রহমান।

এদিকে চিতলমারী উপজেলা চত্বরে কলাতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নৌকা প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী বাদশা মিয়ার নেতৃত্বে উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আলমগীর সিদ্দিকী ও তার সমর্থকদের উপর হামলা হয়েছে। এতে আলমগীর সিদ্দিকীসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েণ করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

এছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ইউপি নির্বাচন কেন্দ্র করে বিভিন্ন প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর শাফিন মাহমুদ বলেন, বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়নে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আমরা চারজনকে আটক করেছি। চিতলমারী উপজেলা চত্বরে পুলিশ মোতায়েণ করা হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। শরণখোলা সাউথখালিতেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। শরণখোলা ও চিতলমারীতে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ দেয়নি কেউ। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। পরবর্তীতে সহিংসতা এড়াতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

১১ এপ্রিল বাগেরহাটের ৯ উপজেলায় ৭৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ৭০টিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here