যশোরঃ
যশোরে মাদক মামলায় দুই বোনকে কারাদন্ড না দিয়ে সাত শর্তে দুই বছর প্রবেশনে মুক্তি দিয়ে নিজ বাড়িতে থাকার আদেশ দিয়েছে একটি আদালত।
বুধবার যুগ্ম দায়রা জজ-২ আদালতের বিচারক শিমুল কুমার বিশ্বাস ভিন্নধর্মী এই রায় দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- অভয়নগর উপজেলার গুয়াখোলা গ্রামের আব্দুল গনির দুই মেয়ে রোজিনা খাতুন ও সেলিনা খাতুন। চলতি সপ্তাহে তিনটি মাদক মামলায় একই ধরণের রায় ঘোষণা হলো। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের সরকারি কৌশুলী (এপিপি) আইয়ুব খান বাবুল।
রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, বাড়িতে থেকে সাজাখাটার শর্তগুলো হলো-সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসারের নজরদারিতে থেকে কোন প্রকার অপরাধের সাথে জড়িত থাকতে পারবেন না। শান্তি বজায় রেখে সকলের সাথে সদাচারণ করতে হবে। আদালত অথবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাকে যেকোনো সময় তলব করিলে শাস্তি ভোগের জন্য প্রস্তুত হয়ে নির্ধারিত স্থানে হাজির হতে হবে। কোন প্রকার মাদক সেবন, বহন, সংরক্ষণ এবং সেবনকারী, বহনকারী ও হেফাজতকারীর সাথে মেলামেশা করা যাবে না। একই সাথে আদালত কর্তৃক প্রবেশন অফিসারের তত্বাবধানে থেকে অবস্থা অবহিত করতে হবে।
এই প্রবেশন অফিসারের লিখিত অনুমতি ছাড়া নিজের এলাকার বাইরে যাওয়া যাবে না। এর ব্যত্যয় ঘটলে আসামিদের প্রত্যেকে দুই বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ১ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ মাসের সশ্রম কারাদন্ডিত হবে।
রায়ে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এ মামলায় আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর দীর্ঘ ১৪ বছরের মধ্যে হাজিরা কামাই দেয়নি তারা। এ মামলা ছাড়া তাদের আর কোন মামলাও নেই। দীর্ঘ স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগে প্রাণিত হয়। আসামির সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী পুর্নবাসনের জন্য শর্ত সাপেক্ষে প্রবেশন অফিসারের নিয়ন্ত্রণে প্রবেশনে মুক্তি প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিচারক।
আদালত সূত্র জানায়, ২০০৭ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর নিজ এলাকা থেকে রোজিনা খাতুনকে ১২ পুরিয়া ও সেলিনা খাতুনকে ১০ পুরিয়া হোরোইনসহ আটক করা হয়। এ ঘটনায় অভয়নগর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়। এ মামলায় দীর্ঘ স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক ওই আদেশ দিয়েছেন।