জাহিদ হাসান, যশোরঃ

শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও হার মানেনি লিতুন জিরা । অদম্য ইচ্ছা শক্তির কারণে এবারের প্রাইমারি স্কুল সার্টিফিকেট (পিইসি) পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে এ শিক্ষার্থী রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। দুই হাত-পা ছাড়াই জন্ম নেয়া লিতুন জিরা মুখে ভর দিয়ে লিখেই এবার পিইসি পরীক্ষা দিয়েছিলো। লিতুন জিরা যশোরের মণিরামপুর উপজেলার খানপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে। সে এবার উপজেলার খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিইসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।

লিতুন জিরা পর নির্ভর হয়ে সমাজের বোঝা হতে চাই না। লেখা পড়া শিখে মানুষের মত মানুষ হয়ে আরো ১০ মানুষের মতো আত্মনির্ভশীল হতে চায় দুই হাত-পা ছাড়া জন্ম নেয়া লিতুন জিরা। মুখ দিয়ে লিখেই মেধার স্বাক্ষর রেখেছে এই শিক্ষার্থী।

লিতুন জিরার বাবা হাবিবুর রহমান ও মা জাহানারা বেগম বলেন, জন্মের পর মেয়ের ভবিষ্যত নিয়ে নানা চিন্তা তাদের বসতো। এখন মেয়ের মেধা তাদের আশার সঞ্চার করছে। লিতুন জিরা আর ১০ জন শিশুর মতো স্বাভাবিকভাবেই খাওয়া-দাওয়া, গোছল সব কিছুই করতে পারে। মুখ দিয়েই লিখে সে। তার চমৎকার হাতের লেখা যে কারো দৃষ্টি কাড়বে। এসময় কথা হয় তার সাথে। লিতুনের একটাই ইচ্ছা, পর নির্ভর না হয়ে লেখা পড়া শিখে নিজেই কিছু করতে চাই। তবে, কিছুদিন আগে মারা যাওয়া দাদুর জন্য খুব মন খারাপ লিতুন জিরা। দাদু বেঁচে থাকলে তিনি খুব কুশি হতেন বলে জানালো লিতুন জিরা।

লিতুন জিরার প্রধান শিক্ষক সাজেদা খাতুন বলেন, তার ২৯ বছর শিক্ষকতা জীবনে লিতুন জিরার মতো মেধাবী শিক্ষার্থীর দেখা পাননি। এক কথায় সে অসম্ভব মেধাবী। শুধু লেখা-পড়ায় না, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডেও অন্যদের থেকে অনেক ভাল। তিনি বলেন, এই ফলাফলে আমরা সবাই খুশি। লিতুন জিরার প্রতি শিক্ষক ও তার সহপাঠীদের দারুণ সহযোগিতা ছিল। সে অনেক দূর যাবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান উল্লাহ শরীফী জানান, মণিরামপুর উপজেলা থেকে দুই হাত-পা ছাড়াই জন্ম নেয়া লিতুন জিরা চলতি প্রাথমিক সমাপনি পরীক্ষা দিয়েছিলো। সে ভালো রেজাল্ট করেছে। লিতুন জিরা সমাজের অনুকরণনীয়। যা অনেক শিক্ষার্থীর অনুপেরণা যুগাবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here