খুলনাঃ

বাগেরহাটের মোংলা উপজেলায় এক বরফকল শ্রমিকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। নিহত সোলায়মান শেখ উপজেলার বাজিকরখণ্ড এলাকার দিনমজুর সেলিম শেখের ছেলে।

তবে এ ঘটনায় মিল মালিক ও এলাকাবাসীর ভিন্ন বক্তব্য পাওয়া গেছে। কেউ বলছেন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আবার কেউ বলছেন মোটরে লুঙ্গি পেঁচিয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই শ্রমিকের। তবে চিকিৎসক ও পুলিশ বলছে, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট কিংবা মোটর পেঁচিয়ে মৃত্যুর কোনো আলামত নিহতের শরীরে পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় বাসিন্দা নাঈম শেখ ও পুলিশ জানায়, উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ বাজিকরখণ্ড এলাকার আয়ান বরফকলে শ্রমিকের কাজ করতো একই এলাকার সোলায়মান শেখ (১৭)। সে প্রায় তিন মাস ধরে ওই বরফকলে কাজ করছিল। বুধবার রাত ৮টার দিকে ওই বরফকলে রহস্যজনক মৃত্যু হয় তার। পরে স্থানীয়রা মরদেহ উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মেহেদী হাসান বলেন, রাত সাড়ে ৮টার দিকে হাসপাতালে সোলায়মান নামে একজনের মরদেহ নিয়ে আসেন স্থানীয়রা। হাসপাতালে আনার ২০/২৫ মিনিট আগে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তবে মরদেহের সঙ্গে যারা আসেন তাদের বক্তব্য এলোমেলো হওয়াতে এবং শরীরে কোথাও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট বা মোটরে লুঙ্গি পেঁচিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনার কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তাই সন্দেহবশত তাৎক্ষণিক পুলিশে খবর দেওয়া হয়।

খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন এসআই মো. হাদীউজ্জামান খাঁন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, নিহতের শরীরের কোথাও কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। ফলে মৃত্যুর কোনো সুস্পষ্ট ক্লু পাওয়া যায়নি। তাই মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

বরফকল মালিক অপু হাওলাদার দাবি করে বলেন, রাত ৮টার দিকে আমি বরফকলের মোটর চালু করলে তাতে সোলায়মানের লুঙ্গি পেঁচিয়ে যায়। এরপর দ্রুত মোটর বন্ধ করে তার কাছে যেতে যেতেই হঠাৎ সে মারা যায়। তিনি আরও বলেন, মোটরে লুঙ্গি পেঁচিয়ে গেলেও তার শরীরের কোথাও আঘাত পায়নি।

এদিকে, বরফকল শ্রমিকের মৃত্যু নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে নানা গুঞ্জন চলছে। তবে মিল মালিক অপু ও তার দুলাভাই মামুন মিলে এ ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা নাঈম শেখ বলেন, শুনেছি বরফকলের মোটরে লুঙ্গি পেঁচিয়ে বৈদ্যুতিক তারের ওপরে পড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে সোলায়মান মারা যায়। তারপর আমি তাকে ইজিবাইকে করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। কিস্তু হাসপাতালে আনার পর ডাক্তার তার শরীরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টের কোনো দাগ পাননি।

নিহতের দাদি শেফালী বেগম বলেন, শুনেছি বরফ কলের মোটর চালাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে সোলায়মান। আমরা তো আর তখন দেখিনি কিভাবে মারা গেছে, তবে অন্যান্যদের মুখে শুনেছি এই কথা।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here