যশোরঃ

মণিরামপুর (যশোর) : মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. শুভ্রারানী দেবনাথকে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।

রোববার (৩ জানুয়ারি) সকাল পৌনে দশটার দিকে হাসপাতাল চত্বরে ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ অভিযুক্ত উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (সেকমো) আবু তৌহিদকে গ্রেফতার করেছে। এই ঘটনায় শুভ্রারানী দেবনাথ বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন।

আবু তৌহিদ উপজেলার নোয়ালী পারখাজুরা গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে। তিনি রাজগঞ্জ উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত।

এদিকে, খবর পেয়ে তখনই মণিরামপুর হাসপাতালে আসেন যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন।

শুভ্রারানী বলেন, ‘সকালে হাসপাতালের প্রধান ফটকে দাঁড়িয়ে কয়েকজন চিকিৎসকের সাথে আমি ফুলবাগানের কাজ দেখছিলাম। এসময় মোটরসাইকেল হাঁকিয়ে সেখানে আসেন আবু তৌহিদ। আমি জানতে চাই, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র ছেড়ে কেন সে এখানে এসেছে। কোনো উত্তর না দিয়ে সে হাতে থাকা একটি তালা আমার দিকে ছুড়ে দেয়। এরপর গালিগালাজ করতে করতে সে আমার মুখে ও মাথায় কয়েকটি চড়-থাপ্পড় মারে। তখন সাথে থাকা চিকিৎসকরা ও আমার গাড়িচালক আবু মুসা তাকে থামানোর চেষ্টা করেন।’
শুভ্রারানী দেবনাথের গাড়িচালক আবু মুসা বলেন, ‘মোটরসাইকেলের ওপর বসে থেকে ম্যাডামকে মারপিট করে তৌহিদ। ওইসময় আমি তাকে জাপটে ধরে ম্যাডামকে রক্ষা করি।’

এদিকে, উপজেলার প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার ওপর হামলার ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্ত সেমকো তৌহিদকে মারপিট করে একটি কক্ষে আটকে রাখেন হাসপাতালের কর্মীরা। পরে পুলিশ সেখানে হাজির হয়ে তাকে উদ্ধার করে।

হাসপাতালের একাধিক স্টাফ জানান, শনিবার (২ জানুয়ারি) একবার হাসপাতালে আসেন তৌহিদ। এরপর ডা. শুভ্রার সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়। তখন সিভিল সার্জনও হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন।

তারা জানান, রাজগঞ্জ কেন্দ্রে যে কক্ষে তৌহিদ বসেন, সকালে সেই কক্ষটি তালাবদ্ধ পেয়ে হাসপাতালে আসেন তিনি। পথে চণ্ডিপুর কমিউনিটি সেন্টার বন্ধ দেখতে পান। সেন্টার বন্ধ থাকলেও তালা খোলা দেখতে পেয়ে তিনি সেই তালা সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে আসেন। এরপর ডা. শুভ্রার কাছে কমিউনিটি সেন্টার বন্ধ থাকার কারণ জানতে চান।
শুভ্রারানী দেবনাথ বলেন, রাজাগঞ্জ উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দায়িত্বরত চিকিৎসক সুমন গুপ্ত অসুস্থ হয়ে খুলনায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। সেইকারণে সেকমো তৌহিদের সেখানে ডিউটি করার কথা।

অভিযুক্ত আবু তৌহিদ বলেন, ‘হাসপাতালে ঢোকার পর কী হয়েছে আমি বলতে পারব না। তবে আমি ম্যাডামকে মারিনি। হাসপাতালের সবাই আমাকে খুব মেরেছে।’

মণিরামপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও উপজেলার প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার ওপর হামলার ঘটনায় শুভ্রারানী মামলা করেছেন। হামলাকারী থানা হেফাজতে রয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন বলেন, ‘খবর শুনে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পুলিশ অভিযুক্তকে আটক করেছে। থানায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত আবু তৌহিদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।’

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here