যশোরঃ

যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে (বালক) বিক্ষোভের সময় তিন শিশু বন্দি পালিয়ে গেছে।

শনিবার (১০ জুলাই) রাতে বিভিন্ন দাবিতে কেন্দ্রে বিক্ষোভ ও ভাঙচুর করে বন্দিরা। পরে রোববার (১১ জুলাই) সকালে থানায় সাধারণ ডায়রির (জিডি) পর দুপুরে বিষয়টি জানাজানি হয়।

কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন জানান, বিভিন্ন দাবিতে শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কেন্দ্রের ভেতর বিক্ষোভ ও ভাঙচুর শুরু করে বন্দিরা। এরপর জেলা প্রশাসনের সহায়তায় রাত ১টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ সময় তিন বন্দি পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় রোববার সকালে কোতোয়ালি থানায় জিডি করা হয়েছে।

এদিকে শনিবার রাতে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. তমিজুল ইসলাম খান বলেন, দেড়শ জনের ধারণক্ষমতার কেন্দ্রটিতে ২৫০ জন বন্দি রয়েছে। কেন্দ্রের বন্দিদের বিভিন্ন অসন্তোষ রয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তারা বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে কেন্দ্র ভাঙচুর শুরু করে তারা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি আমি নিজেও সেখানে যাই। তাদের কথা শুনে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছি। তিন ঘণ্টা পর বিক্ষুব্ধরা শান্ত হয়। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তদন্ত কমিটি গঠন করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মো. সায়েমুজ্জামান বলেন, করোনাকালে বন্দিদের বাইরে বের হতে দেয়া হয় না, খাবারের মান খারাপ, সুপেয় পানির সমস্যা- এমন বেশ কয়েকটি দাবিতে বন্দিরা বিক্ষোভ করেছে। আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে।

কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন জানান, বেশ কিছুদিন ধরে কেন্দ্রের প্রত্যেক বন্দির জন্য দৈনিক ৭২ টাকা করে খাদ্যের বরাদ্দ দেয়ার দাবি করা হচ্ছিলো। এছাড়া কেন্দ্রেটিতে আলাদা আলাদা রুমে সিনিয়র-জুনিয়র ভেদে খাদ্য সরবাহ ও সুযোগ-সুবিধা দেয়ার দাবি ছিল তাদের। সেই দাবিতে শনিবার রাতে তারা বিক্ষোভ শুরু করে। পরে কেন্দ্রের আনসার সদস্যরা বিক্ষোভ বন্ধে অভিযান চালান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যশোর জেলা পুলিশের শতাধিক সদস্য অভিযান চালান। পরে জেলা প্রাশসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৩ আগস্ট যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে তিন বন্দি কিশোরের হত্যা ও ১৫ জনের আহত হওয়ার ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছিল। একাধিক বার তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হয়নি। ফলে কেন্দ্রে বার বার এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here