ঢাকাঃ

অসামাজিক কার্যকলাপ ও শৃঙ্খলাবিরোধী কাজে জড়িত থাকায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাট ও সহ সভাপতি আরমানকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

রোববার যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি এই দুজনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়। কেন্দ্রীয় যুবলীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মিজানুল ইসলাম মিজু রোববার দুপুরে যুগান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে রোববার ভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের পুঞ্জশ্রীপুর গ্রাম থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহসভাপতি এনামুল হক আরমানকে আটক করা হয়। সেখানে মুনির চৌধুরী নামে এক জামায়াত নেতার বাড়িতে সম্রাট লুকিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।

র‌্যাবের মুখপাত্র সারোয়ার বিন কাসেম সম্রাট ও আরমানের গ্রেফতারের খবর নিশ্চিত করেছেন।

সুনির্দিষ্ট মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানায় র‌্যাব। তবে মামলার বিস্তারিত বলতে রাজি হননি র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

এর আগে সম্রাটের অন্যতম সহযোগী ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে যুবলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় মোহামেডান, আরামবাগ, দিলকুশা, ওয়ান্ডারার্স, ভিক্টোরিয়া ও ফকিরেরপুল ইয়ংমেনস ক্লাবে ক্যাসিনো ছিল। এর মধ্যে ইয়ংমেনস ক্লাবে ক্যাসিনো চালাতেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। বাকি পাঁচটি ক্লাবে ক্যাসিনো চালাতেন সম্রাটের লোকজন।

সম্রাট নিজে ক্যাসিনো দেখাশোনা না করলেও তার ক্যাসিনো চালাতেন যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সম্পাদক ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর এ কে এম মমিনুল হক ওরফে সাঈদ। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর সাঈদ সিঙ্গাপুরে পালিয়ে যান।

সম্রাটের সঙ্গে গ্রেফতার হওয়া এনামুল হক আরমান যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ সভাপতি। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, সম্রাটের অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসা যেসব যুবলীগ নেতা পরিচালনা করতেন, তার মধ্যে আরমান অন্যতম। সম্রাটের পরেই ক্যাসিনোবাণিজ্যে তার নাম উচ্চারিত হতো।

ক্যাসিনোবাণিজ্যে আরমানকে গুরু বলে মানতেন সম্রাট।

আরমানের উত্থানটা ঘটে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকা থেকে। নোয়াখালী থেকে ঢাকায় এসে বায়তুল মোকাররমে লাগেজ বিক্রি করতেন তিনি।

এর মাঝেই খালেদা জিয়ার নিকটাত্মীয় ‘বাউন্ডারি ইকবাল’ হিসেবে পরিচিত ইকবাল হোসেনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা বাড়ে।

ইকবালের মাধ্যমে হাওয়া ভবনে যাতায়াত শুরু করেন আরমান। সেই সময় ক্ষমতায় থাকা বিএনপির ছত্রছায়ায় মতিঝিল ক্লাবপাড়ায় প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন তিনি।

সেই প্রভাব খাটিয়ে বিএনপি আমলেই ফকিরাপুলের কয়েকটি ক্লাবের ক্যাসিনোর নিয়ন্ত্রণ নেন আরমান।

এর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে যুবলীগে ভিড় জমান আরমান। সম্রাটের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা শুরু করেন। সম্রাটের বিভিন্ন অপকর্মে শামিল হন। সম্রাটকে মতিঝিল ক্লাবপাড়ার ক্যাসিনোবাণিজ্যে প্রবেশ করান তিনি।

সম্রাটকে সামনে রেখে ক্যাসিনোবাণিজ্যের ক্যাশিয়ার হিসেবে কাজ করতে থাকেন।

সম্রাট ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি হলে সহসভাপতির পদটি বাগিয়ে নেন আরমান। নিজের টাকা দিয়ে তিনি প্রথমে ক্যাসিনোর সরঞ্জাম কিনে আনেন ঢাকায়।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here