সবুজ দেশ নিউজ ডেস্কঃ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশ সম্পর্কে মিথ্যাচার করার পর থেকেই আলোচনায় প্রিয়া সাহা।

সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকেও প্রিয়াকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহীতার’ অভিযোগে অভিযুক্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছে।

প্রিয়া সাহার সমালোচনার সঙ্গে এ প্রশ্ন উঠেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পর্যন্ত নাগাল তিনি কীভাবে পেলেন?

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রিয়া সাহার বাড়ি পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার মাটিভাঙ্গা ইউনিয়নের চরবানিরী গ্রামে। তার স্বামী মলয় সাহা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহা জাতীয় মহিলা ঐক্য পরিষদেরও সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

গত ১৭ জুলাই ওভাল হাউসে এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জানান, বাংলাদেশের মৌলবাদী মুসলিমরা তার জমি কেড়ে নিয়েছে, বাড়িঘরে আগুন দিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিস্টান সম্পদায়ের মানুষ গুম রয়েছেন। আরও ১ কোটি ৮০ লাখ সংখ্যালঘু রয়েছেন, যারা দেশটিতে থাকতে চান।’

এ সময় প্রিয়া সাহা এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে সাহায্যও চান।

প্রিয়া সাহার এমন বক্তব্যের বিষয়ে তার সংগঠন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘প্রিয়া সাহার বক্তব্য একান্তই তার নিজের। আমাদের সংগঠন এ রকম কোনো বক্তব্যের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে কাউকে বলতে তাকে বলেনি। সুতরাং তার বক্তব্যের দায় সংগঠন নেবে না।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে ফ্রিডম অব রিলিজিয়ান নামে একটি সম্মেলন হয়। এতে আমাদের ঐক্য পরিষদের তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। সেই প্রতিনিধিদলে প্রিয়া সাহা ছিলেন না।’

রানা দাশ গুপ্ত আরও বলেন, ‘ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে উনাকে (প্রিয়া সাহা) পাঠানো হয়নি। তিনি কীভাবে ট্রাম্পের কাছে গেলেন, এটা মার্কিন দূতাবাস ভালো বলতে পারবে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত অসুস্থ থাকায় সংগঠনের প্রতিনিধি হিসেবে গত ১৬ জুলাই প্রিয়া সাহা যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন। পরে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করেন।

রানা দাশ গুপ্ত অবশ্য নিজের অসুস্থতার কথা স্বীকার করেন, ‘আমি নিজেই অসুস্থ, ঘর থেকে বের হতে পারছি না। রোববার আমার একটি অপারেশন হবে।’

প্রিয়া সাহাকে ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধি হিসেবে পাঠানোর কথা রানা দাশ অস্বীকার করলেও আয়োজক সংগঠন ফ্রিডম হাউজের ওয়েবসাইটে অবশ্য পষ্ট করেই প্রিয়া সাহার পরিচয় রয়েছে

সেখানে ধর্মীয় কারণে নিপীড়নের শিকার ২৭ জনের মধ্যে যে ২৪ ব্যক্তির তালিকা, তাতে প্রিয়া সাহা ১৮ নম্বরে। তার নামের সঙ্গে পরিচয় হিসেবে লেখা, ‘বাংলাদেশ থেকে আসা একজন হিন্দু, যিনি বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক।’

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here