রংপুরঃ

আজ মঙ্গলবার সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। দিবসটি উপলক্ষে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে জাতীয় পার্টি। রাজধানী ঢাকা ছাড়াও এরশাদের আতুরঘর রংপুরেও নেয়া হয়েছে বিভিন্ন কর্মসূচি।

বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে সাবেক এই প্রধানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে একাধিক কর্মসূচি পালন করবে তার প্রতিষ্ঠিত দল জাতীয় পার্টি। কর্মসূচির মধ্যে আজ সকালে রংপুরের পল্লী নিবাসে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও কবর জিয়ারত। বিকেল ৪টায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভায় অনুষ্ঠিত হবে। এসব কর্মসূচিতে পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের, মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাসহ প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্যরা অংশ নিবেন।

এছাড়াও রংপুরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ছাড়াও দলীয় কার্যালয়ে কালো ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণ, কোরআন খতম, সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ, মিলাদ মাহফিল এবং আলোচনা সভার আয়োজন করেছে জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টি। এদিকে গেল কয়েক ধরেই দলের অঙ্গ সহযোগি সংগঠন জাতীয় যুব সংহতি, স্বেচ্ছাসেবক পার্টি, জাতীয় ছাত্র সমাজ, শ্রমিক পার্টিসহ অন্যরা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন।

এদিকে স্থানীয় নেতারা জানিয়েছেন, দিবসটি উপলক্ষে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন তারা। তবে আগামী প্রজন্মের মাঝে এরশাদের স্মৃতি তুলে ধরতে এরশাদ স্মৃতি কমপ্লেক্স নির্মানের দাবী জানিয়েছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।

এদিকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে পল্লী নিবাসের লিচু বাগানে এরশাদের সমাধি নির্মানের প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ সম্পন্ন করেছে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা ।তিনি জানান, আজ মঙ্গলবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে জাতীয় পার্টির শীর্ষ পর্যায়ের নেতা-কর্মী, সমর্থক ও এরশাদ ভক্তদের পল্লী নিবাসে সমাগম ঘটবে। সবাই যাতে সুন্দর পরিবেশে সাবেক রাষ্ট্রপতির সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও জিয়ারত করতে পারেন, এজন্য সমাধির নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শেষ করেছেন।

উল্লেখ্য, ১৯৮২ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত নয় বছর রাষ্ট্রক্ষমতায় থেকে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিসহ গ্রাম বাংলার উন্নয়নে কাজ করেছের এইচ এম এরশাদ। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ঘোষণা, শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের বৈদ্যুতিক বিল মওকুফসহ উপজলো ব্যবস্থার প্রবর্তকও ছিলেন সাবেক এই রাষ্ট্রপ্রধান। তার আমলেই মুক্তিযোদ্ধাদের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়।

১৯৮৬ সালে এরশাদ প্রতিষ্ঠা করেন জাতীয় পার্টি। শুরু থেকেই বৃহত্তর রংপুর পরিনত হয় জাতীয় পার্টির দুর্গে। আর তাই সাবেক সেনা প্রধান হবার পরও তার মৃত্যুর পর ভক্ত ও অনুসারীদের দাবির মুখে  এরশাদকে রংপুরের পল্লী নিবাসে সমাহিত করা হয়।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ১৯৩০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অবিভক্ত ভারতের কোচবিহার জেলার দিনহাটায় জন্মগ্রহণ করেন। পরে পরিবারের সাথে রংপুরে চলে আসে এরশাদ। নব্বই বছর বয়সে ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here