পাবনাঃ

ঢাকার (ডিএমপি) যাত্রাবাড়ী থানায় কর্মরত পুলিশের উপ-পরিদর্শক(এসআই) নাসির আহমেদকে যৌতুক মামলায় পাবনার বিজ্ঞ আদালত জেল হাজতে পাঠিয়েছেন। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) জেলা পাবনার বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে বিচারক এ আদেশ দেন।

তবে গ্রেফতারের আগে রোববার (১২ জানুয়ারি) এসআই নাসির তার ফেসবুক ওয়ালে তার শ্বশুড়বাড়ির লোকজন তাকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়েছেন বলে দাবি করেন। এমনকি তার স্ত্রী তাকে ঝাঁটা দিয়ে পিটিয়েছেন বলেও এক স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন।

আদালত সুত্রে জানা গেছে, এসআই নাসিরের শ্বশুর পাবনা সদর উপজেলার বলরামপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে পাবনার বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধিত-২০০৩) এর ১১(খ)(গ) ৩০ ধারায় এসআই নাসির আহমেদ ও তার বাবা- মা ও বোন যথাক্রমে মোস্তাক আহম্মেদ, সালমা আহম্মেদ ও লাকী খাতুনকে আসামি করে একটি মামলা (মামলা নং- ১৮৯/২০১৯, এনএস- ২৯/২০২০) দায়ের করেন।

ওই মামলায় বাদি অভিযোগ করেন তার মেয়ে রুবিনা আক্তার রুনার সাথে শহরের কাচারিপাড়ার মোস্তাক আহমেদের ছেলে নাসির এর সাথে পুলিশে চাকরি পাওয়ার আগেই পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবিতে স্বামী পুলিশের এসআই নাসির আহম্মেদ তার স্ত্রী রুবিনা খাতুনের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছে।

এক পর্যায়ে যৌতুক না পেয়ে অন্যান্য আসামিদের যোগ সাজসে নাসির আহমেদ স্ত্রী রুবিনা আক্তার রুনাকে মারপিট করে আহত করে। এছাড়াও আসামি নাসির আহমেদ পরকীয়া প্রেমে আসক্ত বলেও মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। উক্ত মামলার ধার্য তারিখের আগেই গতকাল সোমবার আসামি নাসির আহম্মেদ বিজ্ঞ আদালতে স্বশরীরে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন । পরে পুলিশের এসআই নাসির আহমেদকে পাবনা জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

এদিকে গ্রেফতারের আগে রোববার (১২ জানুয়ারি) এসআই নাসির তার ফেসবুক ওয়ালে তার শ্বশুড়বাড়ির লোকজনের দায়ের করা মামলা নিয়ে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি দাবি করেন তাকে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়েছেন। কারণ তিনি উল্লেখ করেন যে তারিখে ও যে সময়ে তার বিরুদ্ধে মারধোরের অভিযোগ করা হয়েছে সেদিন তিনি কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ি এসেছিলেন। বাড়ি এসে তার নানীর জানাযায় শরিক হয়েছিলেন। তিনি তার প্রভাবশালী শ্বশুড়ের কাছে অসহায়ত্ব দাবি করেন। তিনি তার নিজ ও তার বাবা- মায়ের নিরাপত্তা নিয়েও শংকা প্রকাশ করেন।

এছাড়া ১২ অক্টোবর-২০১৯ তিনি আরেকটি স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন- তিনি তার স্ত্রী রুনাকে মারধোর করেন বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সঠিক নয়। তিনি স্ত্রীকে কোনদিন থাপ্পরও দেন নাই বরং তার স্ত্রী রুনাই তাকে ঝাঁটাপেটা করেছেন। তার প্রভাবশালী শ্বশুড় তাকে রাজশাহী থেকে ঢাকায় শ্বশুড়ের বাসার এলাকায় বদলি করিয়েছেন, ডিবি পুলিশ দ্বারা আন- অফিসিয়ালি আটক করিয়েছেন। বাবা- মার সাথে সম্পর্ক না রাখতে বলেছেন। অক্টোবরে বিভিন্ন মুচলেকা দিয়ে তিনি ছাড়া পান বলে লিখেছিলেন। তিনি পুলিশের আইজিপি’রও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here