নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর ও হরিণাকুণ্ডু পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৩০ জানুয়ারি। এ নির্বাচনে বিদ্রোহীদের নিয়ে বিপাকে সরকারি দল। ইতোমধ্যে অন্তত পাঁচজনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বিএনপির একক প্রার্থী থাকলেও অবস্থা নড়বড়ে। ভোটের মাঠে দলটির গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের দেখা মিলছে না। জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. আছাদুজ্জামান আছাদ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, হরিণাকুণ্ডু উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. মশিউর রহমান জোয়ারদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. শরিফুল ইসলাম শরিফ ও পৌরসভার বর্তমান মেয়র মো. শাহিনুর রহমান রিণ্টুকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে নৌকা প্রতীকের বিপক্ষে মানববন্ধনসহ দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। যদিও অভিযুক্তরা বরাবরের মতো অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। সূত্রমতে, দলীয় প্রতীকের বিরোধিতাকারী আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে অনুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে।

প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, হরিণাকুণ্ডু পৌরসভার বর্তমান মেয়র মো. শাহিনুর রহমান রিন্টুর বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার বিভাগের তদন্তে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি, চাকরি বাণিজ্যসহ জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।

২০১৭ সালের ৪ সেপ্টেম্বর তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত এক পত্রের বরাত দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সূত্রটি। নৌকা প্রতীক না পেয়ে মনোনয়নপত্র দাখিলের পর প্রত্যাহার করে নিয়েছেন তিনি।

তবে থেমে নেই তার কর্মকাণ্ড। অভিযোগ করা হয়েছে, মনোনয়নবঞ্চিতরা নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করছেন। হরিণাকুণ্ডু পৌরসভায় মেয়র পদে লড়ছেন চারজন। তারা হলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মো. ফারুক হোসেন (নৌকা)।

তার বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন হঠাৎ আওয়ামী লীগ নেতা বনে যাওয়া ঠিকাদার সাইফুল ইসলাম ওরফে টিপু মল্লিক। তার মার্কা জগ। এছাড়া রয়েছেন বিএনপির একক প্রার্থী মো. জিন্নাতুল হক (ধানের শীষ) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. নাসির উদ্দিন (হাতাপাখা)।

৯টি সাধারণ ওয়ার্ডে ২৭ জন পুরুষ কাউন্সিলর ও তিনটি সংরক্ষিত আসনে ১১ জন মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পৌরসভায় মোট ভোটার ১৭ হাজার ৭৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ আট হাজার ৩৯২ ও মহিলা আট হাজার ৬৮৩ জন। ৯টি ওয়ার্ডে মোট ভোট কেন্দ্র ৯টি।

জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক অপর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, কোটচাঁদপুর পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় শৃংখলা ভঙ্গ করে মেয়র পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সহিদুজ্জামান সেলিম ও বর্তমান মেয়র মো. জাহিদুল ইসলাম জিরেকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ওই দুই ব্যক্তির সঙ্গে আওয়ামী লীগের আর কোনো সম্পর্ক নেই। তবে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দল থেকে বহিষ্কৃত দু’জনই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহাজাহান আলী। তার জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারেন বিদ্রোহীরা। বিএনপির একক প্রার্থী পৌর বিএনপির আহ্বায়ক এসকেএম সালাহউদ্দীন বুলবুল সিডল।

তিনি দাবি করছেন- সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ধানের শীষ জয়ী হবে। এ পৌরসভা নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা আসনে ১২ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মোট ভোটার সংখ্যা ২৭ হাজার ৪৯৩। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৩ হাজার ৪৮৫ ও মহিলা ভোটার ১৪ হাজার আটজন। ৯টি ওয়ার্ডে ভোট কেন্দ্র রয়েছে ১৪টি।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here