বিশেষ প্রতিনিধিঃ

করোনা ভাইরাসকালীন সময়ে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা হোটেলে না থেকেও ভুয়া বিল ভাউচার দেখিয়ে ৫৭ হাজার ৬০০ টাকা ও হোটেলে খাওয়া বাবদ ৯৬ হাজার টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনায় প্রকাশিত সংবাদের বিরুদ্ধে শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় হাসপাতাল চত্ত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শামীমা শিরিন।

গত ২৬ নভেম্বর সবুজদেশ নিউজ ডটকমে “করোনায় হোটেলে না থেকেও ডাক্তারদের বিল ৫৭০০০ টাকা” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে এ সমাবেশে হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত থাকলেও স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শামীমা শিরিন উপস্থিত হননি। সমাবেশ চলাকালে তিনি নিজ অফিসেই অবস্থান করছিলেন। সমাবেশের প্রথমে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. সুলতান আহমেদ প্রকাশিত সংবাদটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন উল্লেখ করেন। এছাড়াও সমাবেশে কে সভাপতিত্ব করেন এমন কোন তথ্যও প্রদান করা হয়নি।

এরপর সমাবেশে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীরা হোটেলে থাকা চিকিৎসক-নার্স অবস্থান করেছেন এমন কাউকে বক্তব্য দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এরপর প্রায় ৫ মিনিট হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকদের ডাকাডাকি করা হয়। কিন্তু হোটেলে অবস্থান করেছেন এমন কেউ বক্তব্য দিতে আসেননি। উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীরা হোটেলে থাকা বিভিন্ন কাগজপত্র দেখতে চাইলেও সেটা দেখাতে ব্যর্থ হয়। এরপর দীর্ঘক্ষণ সাংবাদিকরা দাঁড়িয়ে থাকলেও হাসাপাতলের চিকিৎসকরা সমাবেশ স্থল ত্যাগ করেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শামীমা শিরিন স্বাক্ষরিত একটি চিঠি প্রতিবাদ সমাবেশের চিঠি সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো হয়।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা: সেলিনা বেগম বলেন, আমি শুনেছি সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করবেন। প্রতিবাদ সমাবেশের বিষয়টি আমি জানিনা। তবে, কালীগঞ্জ হাসপাতালে করোনাকালীন তিন লক্ষ টাকা নিয়ে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে সে ঘটনায় তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, করোনাকালে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা হোটেলে না থেকেও ভুয়া বিল-ভাউচার দেখিয়ে ৫৭ হাজার ৬০০ টাকা এবং খাওয়া বাবদ ৯৬ হাজার টাকা তুলে নিয়েছেন বলে সম্প্রতি গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়।

করোনা প্রণোদনার ৩ লাখ টাকা হরিলুট হওয়ায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগে হইচই পড়ে যায়। কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামীমা শিরিন এ টাকা তুলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ। তবে এ তথ্য অস্বীকার করে তিনি বলেন, সঠিক ভাবেই প্রণোদনার অর্থ ব্যয় করেছেন।

জানা গেছে, ৫ জুলাই ডা. শামীমা শিরিন স্বাক্ষরিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, জুনের ৬ তারিখ থেকে ৬ চিকিৎসক, ৬ নার্স ও অন্যান্য ১২ স্টাফকে কালীগঞ্জের রহমানিয়া আবাসিক হোটেলে থাকা বাবদ ৫৭ হাজার ৬০০ এবং খাওয়া বাবদ ৯৬ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। এছাড়া এপ্রিলের ১ তারিখ থেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বাবদ ৬৬ হাজার টাকা খরচের কথা বলা হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here