নিজস্ব প্রতিবেদক:

জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুলের জন্য ঝিনাইদহের এসএম আনোয়ার হোসেন ৩ বছর আগেই মারা গেছেন। নির্বাচন কমিশনের খাতায় ২০১৮ সালের আগে থেকেই মৃত। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পৌরসভা থেকে স্মার্টকার্ড গ্রহণ করেন পুরাতন জাতীয় পরিচয় পত্র জমা দিয়ে। এর মধ্যে আর কোন নির্বাচনে ভোট দিতে যাননি। ভোটার তালিকায়ও তিনি মৃত। বিষয়টি তিনি জানতেন না। বর্তমানে বাঁচার জন্য করোনার টিকা নিতে গিয়ে এসব তথ্য উঠে আসে। এসএম আনোয়ার হোসেন ঝিনাইদহ পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের কাঞ্চন নগর গ্রামের মৃত শেখ মোহাম্মদ আলী ছেলে। তবে তথ্য সংগ্রহকারী বলেন ইচ্ছাকৃত বা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এইরকম হয়নি।

এসএম আনোয়ার হোসেন জানান, ছোট-খাটো ঠিকাদারি কাজ করি। নির্বাচন কমিশনের ডাটাবেজে আমি মৃত। করোনার ভ্যাকসিনের নিবন্ধন করতে গিয়ে জানতে পারলাম আমি মৃত। নিজে বাড়িতে ফিরে পরিবারের লোকজনকে জানালে সবার চক্ষু চড়ক গাছ। বাঁচতে হলে করোনার টিকা নিতে হবে এমন চিন্তায় ঘুম না আসা এসএম আনোয়ার নির্বাচন কমিশনের খাতায় ২০১৮ আগে থেকেই মৃত। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পৌরসভা থেকে স্মার্টকার্ড গ্রহণ করেন পুরাতন জাতীয় পরিচয় পত্র জমা দিয়ে। এর মধ্যে আর কোন নির্বাচনে ভোট দিতে যাননি। ভোটার তালিকায়ও তিনি মৃত। তিনি অভিযোগ করেন ঝিনাইদহ ওয়াজির আলী স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক শরিফুল ইসলাম তার এলাকায় ভোটার তথ্য সংগ্রহ করেন। তিনিই তাকে তথ্যে মৃত দেখিয়েছেন।

তথ্য সংগ্রহকারী ঝিনাইদহ ওয়াজির আলী স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক শরিফুল ইসলাম বলেন, বাড়ির লোকজনের কাছে শুনে আনোয়ার হোসেনের তথ্য ফর্ম পূরণ করা হয়। ইচ্ছাকৃত বা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এইরকম করিনি। তার ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ মশিউর রহমান, মুল এনআইডি কার্ড নিয়ে আসলে সার্ভার চেক করে বলা যাবে তিনি জীবিত না মৃত। তারপর পরামার্শ দেওয়া হবে।

এদিকে জাতীয় পরিচয় পত্রে এত বড় ভুলের জন্য টিকা নিতে পারছেন না এসএম আনোয়ার হোসেন। ঝিনাইদহে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কথা চিন্তা করে এখনই টিকা নিয়ে নিতে চেয়েছিলেন তিনি। শতবার টিকা নিবন্ধনের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।

এই বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ শামীম কবির জানান, সরকার ৮০ শতাংশ লোককে টিকার আওতায় আনার চিন্তা করেছে। সেই লক্ষ্যে নিবন্ধন না করে শুধু মাত্র জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার লিখে রেখে টিকা দেওয়া ব্যবস্থা করছে। এই ব্যবস্থা চালু হলে তিনি টিকা নিতে পারবেন।

এদিকে নির্বাচন অফিসের দৃষ্টিতে এই ঘটনা খুব ছোট হলেও এমন সমস্যায় ভুগছেন অনেকেই। কারও বাবা-ছেলের বয়সের পার্থক্য ২ বছর,নামের বানান ভুল,সার্টিফিকেটে এক নাম জাতীয় পরিচয় পত্রে আরেক নাম,প্রকৃত বয়সের চেয়ে জাতীয় পরিচয় পত্রে বয়স ১৫-২০ বছর কম এমন সমস্যা নিয়ে প্রতিদিনই নির্বাচন অফিসে ভীড় করতে দেখা যায় অসংখ্য লোকের। ভুক্তভোগীদের দাবি সরজমিনে না গিয়ে তথ্য সংগ্রহকারীদের নিজেদের খেয়াল খুশিমত তথ্য দেওয়ার ফল ভোগ করছেন তারা। উপযুক্ত প্রশিক্ষিত নন এমন অনেকেই স্বজন প্রীতির মাধ্যমে কাজ পেয়ে ভুল-ভাল ভাবে তথ্য পূরণ করেছেন। তথ্য সংশোধন বা হারিয়ে যাওয়া কার্ড ফিরিয়ে পেলেও ভোগান্তি পোহাতে হয় অনেক দিন।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here