সবুজদেশ নিউজ ডেস্কঃ

তাহলে এর আগে যে লিওনেল মেসির নামে শাস্তি ঘোষণা করা হয়েছিল, সেটি কি ভুল ছিল? হ্যাঁ, ভুল ছিল। তবে সেই ভুলটা দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের ফুটবল ফেডারেশনের (কনমেবল) নয়। ভুলটা ছিল গণমাধ্যম কর্মীদের বোঝার ভুল!

কনমেবল ১ ম্যাচের সেই নিষেধাজ্ঞাটা দিয়েছিল লালকার্ডের জন্য। গণমাধ্যম সেটিকেই চালিয়ে দিয়েছিল মেসির সমালোচনার শাস্তি হিসেবে। গণমাধ্যমের সেই ভুলটা কনমেবল ধরিয়ে দিল সমালোচনার জন্য মেসিকে নতুন করে ৩ মাসের নিষেধাজ্ঞা ও ৫০ হাজার ডলার জরিমানা করে।

হ্যাঁ, কোপা আমেরিকায় রেফারি ও কনমেবলের বিরুদ্ধে সেই খুল্লামখুল্লা সমালোচনার জন্য ৩ মাসের জন্য মেসিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি ৫০ হাজার ডলার জরিমানাও করেছে কনমেবল। আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের হয়ে মেসির এই ৩ মাসের নিষেধাজ্ঞা পর্ব শুরু হচ্ছে আজ ৩ আগস্ট থেকে।

এর মানে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের হয়ে সামনের ৩টি প্রীতি ম্যাচে খেলতে পারবেন না মেসি। আর্জেন্টিনা সেই ম্যাচ ৩টি খেলবে যথাক্রমে চিলি, মেক্সিকো ও জার্মানির বিপক্ষে। ম্যাচ ৩টি হবে ৫ সেপ্টেম্বর (চিলির বিপক্ষে), ১০ সেপ্টেম্বর (মেক্সিকোর বিপক্ষে) এবং ১০ অক্টোবর (জার্মানির বিপক্ষে)। এছাড়া চিলির বিপক্ষে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান নির্ধারণী ম্যাচে পাওয়া সেই লালকার্ডের জন্য ঘোষিত ১ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা থাকছেই।

যেহেতু লালকার্ডটা তিনি পেয়েছিলেন কোপা আমেরিকায়, মানে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে, তার শাস্তিটাও মেসিকে ভোগ করতে হবে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচেই। আগামী বছরের মার্চে শুরু হবে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচটাই খেলতে পারবেন না মেসি।

জুন-জুলাইয়ে ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত কোপা আমেরিকায় মেসির আর্জেন্টিনা গিয়েছিল শিরোপা জয়ের লক্ষ্য নিয়ে। কিন্তু সেমি ফাইনালে স্বাগতিক ব্রাজিলের কাছে হেরে শিরোপা স্বপ্ন গুঁড়িয়ে যায় তাদের। ব্রাজিলের বিপক্ষে হারের পরই রেফারি ও কনমেবলকে ধুয়ে দেন মেসি।

কোনোরকম রাখঢাক না করে মেসি সরাসরিই অভিযোগ করেন, ব্রাজিলের কাছে তারা হারেননি। তাদের হারিয়ে দেওয়া হয়েছে! তিনি এমনটাও বলেছেন, কনমেবল ব্রাজিলকে শিরোপা পাইয়ে দিতেই রেফারিদের দিয়ে অন্যায় কাজ করিয়েছে। ম্যাচে তাদের নিশ্চিত দুটি পেনাল্টি থেকে বঞ্চিত করেছেন রেফারি।

এরপর চিলির বিপক্ষে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান নির্ধারণী ম্যাচে অন্যায়ভাবে লালকার্ড দেওয়া হয় মেসিকে। আসল অপরাধী ছিলেন চিলির অধিনায়ক গ্যারি মেডেল। তিনিই নিজের শরীর দিয়ে মেসিকে একের পর এক গুঁতো মারেন। অসহায় মেসি গুঁতোর আঘাতে একটু একটু করে পেছাতে থাকেন। কিন্তু রেফারি দৌড়ে গিয়ে দুজনকেই দেখান লালকার্ড।

ম্যাচ শেষে রাগে-ক্ষোভে-হতাশায় ফেটে পড়েন মেসি। অন্যায়ের প্রতিবাদ হিসেবে নিজের ব্রোঞ্জ পদকটি নিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। আর্জেন্টিনা দলের অন্য খেলোয়াড়রা নিজেদের মেডেল নিলেও মেসি নেননি। উল্টো গণমাধ্যমের সামনে হাজির হয়ে খুল্লামখুল্লা ভাষায় কনমেবলকে ধুয়ে দেন বার্সেলোনা তারকা।

তিনি সরাসরিই কনমেবলকে দুর্নীতিবাজ দাবি করেন। বলেন, ব্রাজিলকে শিরোপা পাইয়ে দিতে কনমেবল পরিকল্পিতভাবে রেফারিদের দিয়ে দুর্নীতি করিয়েছে। তারা কিছুতেই কনমেবলের সেই দুর্নীতির অংশ হতে পারেন না। তিনি এটাও বলেন, সেমি ফাইনালের পর তার কথার ভিত্তিতেই হয়তো তাকে অন্যায়ভাবে লালকার্ড দেওয়া হয়েছে।

কনমেবলের সমালোচনার পাশাপাশি ব্রাজিলকেও অসম্মান করেন মেসি। শিরোপা জয়ের পর তার জবাব অবশ্য ব্রাজিলিয়ানরা দিয়েছেন। আর যাদের ‘দুর্নীতিবাজ’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন, সেই কনমেবল মেসির ওপর ঝুলিয়ে দিল নিষেধাজ্ঞা ও জরিমানার খড়্গ।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here