মেজবা উদ্দিন পলাশ, কুষ্টিয়াঃ

কুষ্টিয়ার ফসলি জমির মাঠ সর্বত্রই এখন হলুদের সমারোহ। বেশিরভাগ ফসলি জমি এখন সরিষা ফুলে ভরে উঠেছে। শীতে প্রকৃতি সেজেছে অন্য রুপে। আর হলুদে বুকে মৌচাষীরা ব্যস্ত মৌমাছি দিয়ে সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহের কাজে। তেমনি একজন মৌচাষী কুষ্টিয়ার সফল উদ্যোক্তা মামুন-অর-রশিদ মামুন।

বন্ধুর অনুপ্রেরণায় ও নিজের প্রচেষ্টায় হলুদের বুকে মধু সংগ্রহ করে এখন তিনি স্বাবলম্বী। শুধু মামুনই নয়, মামুনের মধু খামারের ১১জন কর্মচারীদেরও আজ ভাগ্য বদলে গেছে। এক সময়ের বেকার মঞ্চ নাটকের অভিনেতা মামুন আজ সফল উদ্যোক্তা।

মামুন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের গেটপাড়া গ্রামের মৃত মসলেম উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে। বিএ পাস করে চাকরির পিছে না ছুটে নিজেই এলাকার বেকার ১১যুবকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন। তাকে এখন কুষ্টিয়ার মানুষ আদর্শ ভাবছেন। প্রিয় মুখও বটে। শুধু কুষ্টিয়ার মিরপুরের মানুষ নয়, দেশ বিদেশের মানুষ তাকে মধু মামুন হিসেবে চিনেন।

বুধবার দুপুরে মিরপুর উপজেলার ধুবইল ইউনিয়নের বড়ইতলা মাঠে মৌ খামারি ও সফল উদ্যোক্তা মামুনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, স্বাবলম্বী হওয়ার গল্পটা একটু আলাদা। বন্ধুর অনুপ্রেরণায় আজ আমি স্বাবলম্বী। হলুদের বুকে মৌমাছিগুলো সরিষা ফুলে ফুলে ছুটে মধু সংগ্রহ করে আমার জীবনের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছে। আমার মৌ খামারের মৌমাছিগুলোই আমার প্রাণ। মৌমাছিগুলোর জন্যই আজ আমি দেশ বিদেশের মানুষের কাছে মধু মামুন হিসেবে পরিচিত। দেশের বিভিন্ন স্থানে মধু সংগ্রহ করে চলে আমার পুরো বছর। ফসলি জমির মাঠও মৌ খামার দেখতে দর্শনার্থীরাও ভিড় করে খামারে।

মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, মামুন মধু খামারের মাধ্যমে যেমন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন তেমন সরিষার পরাগয়নে সুবিধা করছেন। আমরা কৃষি অফিসের মাধ্যমে তাকে মৌ-চাষে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। ইতোমধ্যে মামুন বেশ সাফল্য অর্জন করেছে। তিনি আরও বলেন, সরিষাক্ষেতে মৌ-চাষ করলে ফুলের পরাগায়ন ঠিকমতো হয়। এজন্য সরিষার উৎপাদন বৃদ্ধিপায়।

কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিফতরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) রঞ্জন কুমার প্রামানিক বলেন, সরিষাক্ষেতে মৌ-চাষ একটি লাভজনক। মামুনের মত যুবকরা মধু খামারের মাধ্যমে যেমন কৃষি উৎপাদন বাড়াচ্ছেন তেমনি মধু উৎপাদন করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। জেলা কৃষি অফিস সবসময় এমন উদ্যোক্তাদের পাশে থাকবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here