যশোর জেনারেল হাসপাতালে স্থাপিত হচ্ছে এআরটি সেন্টার

যশোরঃ

যশোরে এইচআইভি পজিটিভ রোগীর সংখ্যা ১৪৬ জন। এর মধ্যে এইডস রোগী পাঁচজন। এদিক, যশোরে এইচআইভি ও এইডস রোগীদর জন্য অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপি (এআরটি) সেন্টার স্থাপনের কাজ চলছ। দুই মাসের মধ্যই এই সেন্টার স্থাপন করা সম্ভব হবে বলে আশা করছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

আজ বিশ্ব এইডস দিবস। ১৯৮৮ সাল থেকে প্রতিবছর ১ ডিসেম্বর সারাবিশ্বে দিবসটি পালিত হচ্ছে। সারাদেশের মতো যশোরেও নানা কর্মসূচিতে দিবসটি পালিত হচ্ছে।

স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ২০০৬ সাল থেকে যশোরে এইচআইভি/এইডস শনাক্ত পরীক্ষা করা হচ্ছে। যশোর ২৫০ শয্যা জেনারল হাসপাতালে এই পরীক্ষা করা হয়। এখানে এ পর্যন্ত ৩৪ হাজার ৬৯৩ জনের এইচআইভি পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৩ এইডস রোগী শনাক্ত হয়েছে। এই ১৩ জনের মধ্যে আটজন মারা গেছেন। এখন জীবিত আছেন পাঁচজন। আর এইচআইভি পজিটিভ রোগী আছেন মোট ১৪৬ জন। অর্থাৎ বাকি ১৪১ জন এইচআইভি পজিটিভ হলেও এইডস রোগী নন।

সূত্র অনুযায়ী, গত তিন বছর যশোরে এইচআইভি, এইডস পরীক্ষার পরিমাণ অনেক বেড়েছে। গত ১৭ বছর ৩৪ হাজার ৬৯৩ জনকে পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে গত তিন বছরেই পরীক্ষা করা হয়েছে ১৬ হাজার জনের। চলতি বছর পরীক্ষা করা হয়েছে ৫ হাজার ৬৪০ জনের। এর মধ্যে পজিটিভ রোগী পাওয়া গেছে ১০ জন। গত বছর ৬ হাজার ১৪৫ জনের পরীক্ষা করা হলেও পজিটিভ রোগী ছিল মাত্র একজন।

এর আগ ২০২০ সালে ৪ হাজার ২৬৫ জনের পরীক্ষা করা হলে পজিটিভ রোগী পাওয়া যায় ১০ জন। যশোরে সবচেয়ে বেশি পজিটিভ রোগী পাওয়া গিয়েছিল ২০১৫ সালে ৩৩ জন। ওই বছর এইচআইভি, এইডস পরীক্ষা করা হয় ১ হাজার ১৪৩ জনের।

যশোর জেলা এইডস কমিটির ফোকাল পারসন আবিদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তারা এইডস নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে এইচএইভি পরীক্ষা করার জন্য উদ্বুদ্ধ করছেন। যাতে এইচআইভি, এইডস পজিটিভ রোগী শনাক্ত করা যায়। এতে অন্তত অগোচরে কেউ এই রোগের জীবাণু ছড়াবেন না। পাশাপাশি কী কী সচেতনতা অবলম্বন করলে এইচআইভি, এইডসের ঝুঁকি থেকে নিরাপদ থাকা যায়, সে বিষয়েও তারা ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি আরও জানান, যশোর ২৫০ শয্যা জেনারল হাসপাতালে নিয়মিত এইচআইভি, এইডস পরীক্ষা করা হচ্ছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতির (এফপিএবি) যশোর অফিসেও এই পরীক্ষার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া যশারের আরও আটটি সংস্থা নির্দিষ্ট কিছু জনগোষ্ঠীর এইচআইভি, এইডস পরীক্ষা করে থাকে।

এদিক, এইচআইভি ও এইডস রোগীদর চিকিৎসায় যশোরে এআরটি সেন্টার স্থাপনের কাজ এগিয়ে চলেছে। খুব দ্রুতই এটি স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি স্থাপিত হলে এইচআইভি ও এইডস রোগীদর চিকিৎসার জন্য আর খুলনায় ছুটতে হবে না। যশোরেই তাদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হবে।

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারল হাসপাতালের এইডস/এসটিডি কর্মসূচির সেন্টার ম্যানেজার মেডিকেল অফিসার ডা. নওমি আফরিন জানান, যশোর ২৫০ শয্যা জেনারল হাসপাতালে তিনটি কক্ষ নিয় এআরটি সেন্টার স্থাপনের কাজ চলছে। এখানে একটি পিসিআর মেশিন স্থাপন করা হবে। এর মাধ্যমে এইচআইভি, এইডস পজিড়িটিভ রোগী শনাক্তের পাশাপাশি তাদের ‘ভাইরাস লোড’ও নির্ণয় করা সম্ভব হবে। এরপর তাদের সে অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া হবে।

যশোরের সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস বলেন, যশোর ২৫০ শয্যা জেনারল হাসপাতালে এইচআইভি, এইডস রোগীদর জন্য এআরটি সেন্টার স্থাপনের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। আগামী এক, দু’মাসের মধ্যেই এটি নির্মাণ সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি নির্মিত হলে যশোর থেকেই এইচআইভি, এইডস রোগীরা চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করতে পারবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here