আসিফ কাজলঃ

ছবিতে ঘরবাড়ি ফেলে মালামাল নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার এই দৃশ্যা আজাদ কাশ্মির বা পৃথিবীর অন্য কোন যুদ্ধ পীড়িত রাষ্ট্রের নয়। এটা শৈলকুপা উপজেলার একটি গ্রামের। যে গ্রামটিতে দিন তিনেক আগে আওয়ামীলীগের দুটি সামাজিক দলের নেতার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল।

সেই সংঘর্ষে জনা চল্লিশেক নারী ও পুরুষ আহত হয়েছিল। সেই সাথে ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছিল ৩০টি বাড়ি। ভালবাসা আর শান্তি যখন এক সাথে মানুষের মন থেকে উঠে যায়, তখন অমানবিক এক আচরণ ভর করে সেখানে। হৃদয় হয় পাষান।

একদা শৈলকুপার পাইকপাড়ার গ্রামটিতেও শান্তি ছিল। ছিল ভালবাসা। কত মহব্বতের সাথে বসবাস করছিল মানুষ। কিন্তু দলীয় স্বার্থ আর মাতুব্বরী ভাব শান্তিপ্রিয় গ্রামবাসির মধ্যে বিভেদ আর অনৈক্যের ফাটল এনে দিয়েছে।

এই সেদিনও ঝিনাইদহের সৎ এবং জনবান্ধব পুলিশ সুপার মোঃ হাসানুজ্জামান শৈলকুৃপায় সমাবেশ করে শান্তি শৃংখলা বজায় রাখতে সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি আহবান জানিয়েছিলেন। কিন্তু তার কথার কতটুকু মুল্যায়ন করলেন শৈলকুপার মানুষ ? দু’দিনের এই দুনিয়ায় কেন ভাই এতো আস্ফালন ? আমরা জানি শান্তি আর গনতন্ত্রের জন্য ভোট। আর সেই ভোট এখন ঘর বাড়ি ছাড়া, মারামারি, হানাহানি, মামলা মোকদ্দমা আর নিষ্ঠুরতার বিষ বাষ্প ছড়ানোর পথ হিসেবে কেও কেও ব্যাবহার করছে।

বিশেষ করে শৈলকুপায় এই অমানবিক চর্চা বেশি হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিন কোন না কোন গ্রামে মারামারি হচ্ছে। একই দলের সমর্থক তারা। অথচ তাদের মধ্যে কত নিষ্ঠুরতা। ভাই ভাইকে কোপাচ্ছে, ঘরবাড়ি ছাড়া করছে। পাইকপাড়া গ্রামে পুলিশ ভায়েরা ২৪ ঘন্টা ডিউটি করছেন। অভয় দিচ্ছেন বাড়ি না ছেড়ে যেতে। কিন্তু তারপরও মনে বিশ্বাস নেই কতিপয় গ্রামবাসির।

“এই বুঝি আবার সংঘর্ষ বাধলো” এই আতংক আর গুজবে দলে দলে মানুষ বাড়ি ছাড়ছে মালামাল সঙ্গে নিয়ে। পাইকপাড়া গ্রামবাসি ভাইয়েরা আপনারা গ্রামেই থাকুন। বাপ দাদার জন্ম ভিটা ছেড়ে ক্ষনিকের জন্য যাবেন না। বিপদ কখনেই স্থায়ী নয়।

লেখকঃ সিনিয়র সাংবাদিক, ঝিনাইদহ।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here