কালীগঞ্জে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত একটি পরিবার

ঝিনাইদহঃ

ঝিনাইদহে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা কমেনি। প্রতিদিন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নেই সন্ধান মিলেছে ২২ ডেঙ্গু রোগীর। এর মধ্যে বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে আলতাফ হোসেনের স্ত্রী তারানা বেগম (৩৫) ও বানুড়িয়া গ্রামের আব্দুর রহিমের স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৫৫) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

মন্ডল পাড়ার সাগর হোসেন জানান, ডেঙ্গুর ভয়ে তিনি চৌগাছার শ^শুর বাড়িতে ওঠেন। তারপরও তিনি রক্ষা পান নি। বাড়ি ফিরে দেখেন তার মা চম্পা বেগমও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের পাড়ার রমজান আলীর পরিবারের ৩ সদস্য ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। গোটা মন্ডল পাড়ায় কমপক্ষে ২২ জন নারী-পুরুষ ও শিশু ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। যাদের বেশির ভাগই চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন, একটি শিশু এখনও খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জানা গেছে, আরশেদ আলী মন্ডলের স্ত্রী আনজুরা বেগম (৪০), ফজলুর রহমান মন্ডলের স্ত্রী মাজেদা বেগম (৫০), ফকির মন্ডলের ছেলে জালাল উদ্দিন মন্ডল (৪২), মোশারফ হোসেন মন্ডল (৬০), তার ছেলে বিপুল হোসেন (৩০), অহেদ আলী স্ত্রী নুরী বেগম (৩৬), আব্দুল রাজ্জাকের ছেলে শরিফুল ইসলাম (৪৫), মইন উদ্দিনের ছেলে রমজান আলী মন্ডল (৪৫), রফিকুল ইসলামের ছেলে সাহাবুল মন্ডল (১২), রমজান আলীর স্ত্রী শেফালী বেগম (৪৫), তার ছেলে আসিফ হোসেন (১৭), কন্যা রাবেয়া খাতুন (১৫), মৃত বাবর আলীর ছেলে সাবজাল হোসেন মন্ডল (৫০), বাবার আলীর ছেলে তাহাজ্জেল হোসেন (৪০), ছেলে আব্দুস সালাম (২৬), আশরাফ আলীর স্ত্রী আনজুরা বেগম (৪০), এলাহী মন্ডলের স্ত্রী চায়না বেগম (৬৫), জহিদুল ইসলামের স্ত্রী শর্মিলা আক্রার পপি (২৬), তরিকুল ইসলামের ছেলে তামিম ইকবাল (৭), আসলাম উদ্দিনের স্ত্রী চম্পা বেগম (৩৫), মীর আব্দুল করিমের স্ত্রী জহুরা খাতুন(৬০), মমিনুর রহমানের স্ত্রী কুটি বেগম (৫০) ও মিন্টু মন্ডলের ছেলে তানভীর (৪) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত।

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে সাদ্দাম হোসেন জানান, তাদের গ্রাম একতারপুরে তিনটি পাড়া রয়েছে। এগুলো হচ্ছে বিশ্বাসপাড়া, খন্দকারপাড়া ও মন্ডলপাড়া। এই মন্ডলপাড়ায় শতাধিক পরিবার বসবাস করে। যাদের প্রায় প্রতিটি পরিবারে মানুষের শরীরে জ¦র দেখা দিয়েছে। আর কমপক্ষে ২৫ জন ডেঙ্গু রোগি সনাক্ত হয়েছে।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কর্মকর্তা হুসাইন সাফায়াত জানান, তাঁরা এখন পর্যন্ত অন্তত ২২ জন ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা দিয়েছেন। এ ছাড়া প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানানো হয়েছে।

ত্রিলোচনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, তাঁরা বেশ কয়েকবার ওই পাড়ায় ওষুধ ছিটিয়েছেন। পরিচ্ছন্নতা অভিযান করেছেন। তারপরও কেন এমন হচ্ছে, তা বুঝতে পারছেন না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবর্ণা রানী সাহা বলেন, বিষয়টি জানার পর তিনি ওই এলাকার ইউপি সদস্যকে প্রধান করে তাঁরা একটি কমিটি করেছেন। যারা পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা কাজে সবাইকে সচেতন করার কাজ করছে। ওষুধ ছিটানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here