সিলেটঃ

সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধূকে গণধর্ষণের মামলার প্রধান আসামি ছাত্রলীগকর্মী সাইফুর রহমান গ্রেফতার এড়াতে দাড়ি কামিয়ে ছদ্মবেশ ধরেছিলেন। তার মুখভর্তি দেড় ইঞ্চি পরিমাণ লম্বা দাড়ি ছিল।

রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর দেখা যায় সাইফুরের মুখে দাড়ি নেই। দুদিন ধরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানোর পর রোববার সকালে সুনামগঞ্জের ছাতক থেকে সাইফুরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার এড়াতে নিজের চেহারায় পরিবর্তন এনেছিলেন তিনি। ধরেন ছদ্মবেশ। তার মুখে দাড়ি না থাকায় অবাক হন অনেক পুলিশ কর্মকর্তা।

পুলিশ জানায়, সাইফুরের মুখে লম্বা দাড়ি থাকলেও গ্রেফতার এড়াতে দাড়ি কেটে ফেলেন। চুলও ছোট করে করেন তিনি। তবে ছদ্মবেশ ধরেও রক্ষা পাননি সাইফুর।

সিলেটের বালাগঞ্জের চান্দাইপাড়া গ্রামের তাহিদ মিয়ার ছেলে সাইফুর রহমান এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে তরুণী গণধর্ষণ এবং অস্ত্র মামলার প্রধান আসামি।

শুক্রবার এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে সাইফুরসহ ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। গ্রেফতারের পর মহানগর পুলিশের শাহপরান থানায় সাইফুরকে হস্তান্তর করা হয়।

শাহপরান থানা পুলিশের ওসি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, সাইফুরের মুখে লম্বা দাড়ি থাকলেও গ্রেফতার এড়াতে দাড়ি কেটে ফেলেন। চুলও ছোট করেন তিনি। তবে ছদ্মবেশ ধরলেও পুলিশের হাত থেকে রক্ষা পাননি সাইফুর।

এর আগে সকাল ৬টার দিকে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার মনতলা এলাকা থেকে মামলার চার নম্বর আসামি অর্জুন লস্করকেও গ্রেফতার করে সিলেট জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এ নিয়ে মামলার দুই আসামি গ্রেফতার হলো। দুজন আসামি সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

শুক্রবার বিকেলে স্বামীর সঙ্গে এমসি কলেজে বেড়াতে গিয়েছিলেন এক গৃহবধূ। সন্ধ্যায় তাদের কলেজ থেকে ছাত্রাবাসে ধরে নিয়ে যায় ছাত্রলীগের ছয়-সাত নেতাকর্মী। এরপর দুইজনকে মারধর করা হয়। একই সঙ্গে স্বামীকে আটকে রেখে তার সামনে স্ত্রীকে গণধর্ষণ করে তারা। খবর পেয়ে রাতে ছাত্রাবাস থেকে ওই দম্পতিকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ধর্ষণের শিকার হওয়া নারীকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে ভর্তি করা হয়।

রোববার দুপুরে সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২২ ধারায় ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরে জবানবন্দি দেন নির্যাতিত গৃহবধূ। এরপর তাকে আবার হাসপাতালে নেয়া হয়।

এ ঘটনায় শনিবার ছাত্রলীগের ছয় নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন গৃহবধূর স্বামী। পুলিশ রোববার সকালে সুনামগঞ্জের ছাতক থেকে সাইফুর রহমান ও হবিগঞ্জের মাধবপুরের মনতলা থেকে অর্জুন লস্করকে গ্রেফতার করে। তারা দুজনই সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here