সবুজদেশ রিপোর্টঃ

দেশের পশ্চিমাঞ্চলের সড়ক এবং ডিজিটাল যোগাযোগ উন্নয়নে নতুন উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ভোমরা থেকে সাতক্ষীরা এবং নাভারন, যশোর হয়ে ঝিনাইদহ মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা হবে। এর মাধ্যমে পশ্চিমাঞ্চলীয় অর্থনৈতিক করিডর গড়ে তোলার কাজ সহজ হবে। এতে সরাসরি ২ কোটি মানুষ উপকৃত হবে। জাতীয় অর্থনীতিতে নতুন গতি আসবে।

‘ওয়েস্টার্ন ইকোনমিক করিডর অ্যান্ড রিজিওনাল এনহান্সমেন্ট’ নামে এই কর্মসূচিতে ১৪০ কোটি ডলারের ঋণ দেওয়ার কথা রয়েছে বিশ্বব্যাংকের। কর্মসূচির প্রথম পর্যায়ের প্রকল্পে ৫০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে গত মঙ্গলবার। প্রথম পর্যায়ে যশোর থেকে ঝিনাইদহ পর্যন্ত ৪৮ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা হবে। ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের প্রধান কার্যালয় এই অনুমোদন দিয়েছে। গতকাল বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে ঋণ অনুমোদনের এই তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ভোমরা থেকে ঝিনাইদহ ১১০ কিলোমিটার চার লেন নিরাপদ এবং বৈরী আবহাওয়ায় টিকে থাকার উপযোগী করে নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া ৬০০ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক এবং ৩২টি স্থানীয় বাজার উন্নয়ন করা হবে। এতে স্থানীয় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি বাড়বে। সড়ক নিরাপত্তায় ধীরগতির পরিবহন চলাচলের জন্য আলাদা লেন থাকবে।

ঋণ অনুমোদন উপলক্ষে এক বিবৃতিতে বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেছেন, বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল কৃষি এবং প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত পণ্যে সমৃদ্ধ। ফলে জাতীয় এবং আঞ্চলিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্যাপক সম্ভাবনা আছে এ অঞ্চলের। এই প্রকল্প সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সহায়ক হবে। উৎপাদিত পণ্য খামার থেকে হাটে, রাজধানী ঢাকা এমনকি প্রতিবেশী দেশগুলোতেও যেতে পারে। এভাবে এই প্রকল্প বাণিজ্য এবং ট্রানজিট ও করিডোরকে শক্তিশালী করবে।

সাশ্রয়ী ইন্টারনেট ব্যবহার বাড়াতে চার লেনের মহাসড়কের পাশে ফাইবার অপটিক্যাল কেবল সংযুক্ত থাকবে। কভিড-১৯ এর মতো অন্যান্য সংকটে জরুরি সহায়তা এবং ব্যবসা পরিচালনায় ইন্টারনেট সেবা গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ পরিবহন বিশেষজ্ঞ রাজেশ রোহাতজি বলেন, কভিড-১৯ এর প্রভাবে দরিদ্ররা কাজ এবং আয় হারিয়েছে। এই প্রকল্পে তাদের কাজের সুযোগ তৈরি হবে। এমনকি করোনার পরও নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেবে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) বিশ্বব্যাংক উইংয়ের প্রধান ও অতিরিক্ত সচিব সাহাবুদ্দীন পাটোয়ারী সমকালকে বলেন, বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আগেই এ সংক্রান্ত আলোচনা শেষ করেছেন তারা। ৫০ কোটি ডলারের ঋণ বিশ্বব্যাংকের বিশেষ রেয়াতি ঋণ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোয়িশেন (আইডা)-১৮ এর অধীনে সর্বশেষ সহায়তা। এই ৫০ কোটি মিলে এর আওতায় মোট ৫০০ কোটি ডলার সহায়তা পাওয়া গেছে। আগামী আইডায় ৬০০ কোটি ডলারের সহায়তা চেয়েছেন তারা। আইডা ঋণ ৪ বছরের রেয়াতকালসহ ৩৪ বছরে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এর সুদের হার ১ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জসহ মোট ২ শতাংশ সুদ রয়েছে এই ঋণে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here