ঢাকাঃ
সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করার জন্য স্কুলে খোঁজ নিতে গিয়ে গণপিটুনিতে তাসলিমা বেগম রেনু (৪০) নামে এক নারী নিহত হওয়ার ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ দেখে তিন যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
রোববার রাতে তাদের আটক করা হয়। আটকরা হলেন- জাফর, শাহীন ও বাপ্পী। বাড্ডা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাজ্জাক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গণপিটুনিতে নারী নিহত হওয়ার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই নারীকে পিটিয়ে হত্যার সময় হৃদয় নামে যে ছেলেটির ছবি ভাইরাল হয়েছে তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এর আগে শনিবার রাতে গণপিটুনিতে তাসলিমা বেগম রেনু (৪০) নিহত হওয়ার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা চার থেকে পাঁচশ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। বাড্ডা থানায় নিহতের ভাগিনা সৈয়দ নাসির উদ্দিন টিটু বাদি হয়ে ওই মামলাটি দায়ের করেন বলে পরিবর্তন ডটকমকে জানান থানার ডিউটি অফিসার এসআই মাসুদ।
তিনি জানান, নিহতের ভাগিনা মামলাটি করেছেন, মামলায় অজ্ঞাতনামা আনুমানিক ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এসআই সোহরাব হোসেনকে।
এসআই সোহরাব বলেন, স্কুলটির অভিভাবক, উৎসুক জনতাসহ অনেক মানুষ ওই নারীকে অতর্কিতভাবে গণপিটুনি দেয়, এতে তিনি মারা যান। ওই ঘটনায় মামলা হয়েছে, তদন্তের দায়িত্ব আমাকে দেয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এর আগে সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিহতের মরদেহ শনাক্ত করেন তার ভাগিনা সৈয়দ নাসির উদ্দিন টিটু।
তিনি জানান, তাসলিমা বেগম রেনু মহাখালীর জিপি জ ৩৩/৩ ওয়ারলেস গেট এলাকায় থাকতেন। তার ১ ছেলে তাহসিন আলমাহিদ (১১) ও এক মেয়ে তাসমিন তাবা (৪)কে ভর্তি বিষয়ে স্কুলে গিয়েছিলেন।
রেনু এর আগে ওই স্কুলেরই পাশে আলী মোড় এলাকায় স্বামী তসলিম হোসেনের সাথে পরিবার থাকতেন। গত দুই বছর আগে পারিবারিক কলহের কারণে তাদের মধ্যে ডিভোর্স হয়ে যায়। এরপর থেকে সন্তানদের নিয়ে মহাখালীতেই থাকেন।
টিটু বলেন, শনিবার সকালে উত্তর বাড্ডায় ঐ স্কুলে গিয়েছিলেন সন্তানকে ভর্তি করার জন্য খোঁজখবর নিতে। আর সেখানে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
আক্ষেপ করে তিনি বলেন, পুলিশ প্রশাসন থাকতে কীভাবে ঐ এলাকার লোকজন তাকে পিটিয়ে হত্যা করলো! আমি এর বিচার দাবি করি।
উল্লেখ্য, শনিবার সকালে উত্তর বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ছেলেধরা সন্দেহে ওই নারীকে পিটেয়ে হত্যা করা হয়েছে।