ঝিনাইদহঃ

মাদ্রাসার শিক্ষকদের ক্রমাগত নির্যাতনের প্রতিশোধ নিতে শিক্ষকদের ফাঁসাতে ৫ মাদ্রাসা ছাত্র শিশু আবিরকে বলাৎকারের পর গলা কেটে হত্যা করে । সোমবার গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে কয়রাডাঙ্গা গ্রামের নুরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসার ছাত্র আনিসুজ্জামান (১৮), ছালিমির হোসেন (১৭) ও আবু হানিফ রাতুল (১৬) সোমবার রাতে চুয়াডাঙ্গার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

২৪ জুলাই চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার কয়রাডাঙ্গা গ্রামের নুরানি হাফিজিয়া মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র আবির হুসাইনের মাথাবিহীন লাশ উদ্ধার হয়। মাদ্রাসার অদূরের একটি আমবাগান থেকে তার লাশ উদ্ধার হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর আব্দুল খালেক জানান, রোববার রাতে মাদ্রাসার ছাত্র সদর উপজেলার হানুড়বাড়াদী গ্রামের আনিসুজ্জামান, টেইপুর গ্রামের ছালিমির হোসেন, আকুন্দবাড়িয়া গ্রামের আবু হানিফ রাতুল, আব্দুর নুর ও বলদিয়া গ্রামের মুনায়েম হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তিনজন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে আবির হুসাইনকে হত্যার কথা স্বীকার করে। পুলিশ সোমবার রাত ৯টার দিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে গ্রেফতারকৃত পাঁচ মাদ্রাসা ছাত্রকে চুয়াডাঙ্গার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করেন। এ সময় আনিসুজ্জামান, ছালিমির হোসেন ও আবু হানিফ রাতুল আদালতের বিচারক সাজেদুর রহমানের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

জবানবন্দিতে তারা উল্লেখ করেন, দীর্ঘদিন ধরে মাদ্রাসার শিক্ষক তামিম বিন ইউসুফ ছাত্রদের ওপর নির্যাতন চালাত। মারধরসহ ছাত্রদের দিয়ে শরীর ম্যাসেজসহ বলাৎকার করত। ঠিকমতো খেতে দিত না। তারা বলে, এ সব বিষয়ে আমরা (মাদ্রাসার ছাত্ররা) প্রতিবাদ করলে নির্যাতনের মাত্রা বাড়ানো হতো। বিষয়টি নিয়ে আমরা পাঁচজন শিক্ষক তামিম বিন ইউসুফকে হত্যার পরিকল্পনা করি। পরে সে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে আমরা মাদ্রাসা ছাত্র আবির হুসাইনকে হত্যার পরিকল্পনা করি। কারণ আবিরকে গ্রাম থেকে তামিম বিন ইউসুফ স্যারই মাদ্রাসায় নিয়ে আসে। তারা জবানবন্দিতে আরো বলে, ২৩ জুলাই রাত ৮টার দিকে আমরা পাঁচজন মিলে আবিরকে গল্প করতে করতে মাদ্রাসার পাশে আমবাগানে নিয়ে যাই। এরপর আনিসুজ্জামানসহ আমরা তিনজন তাকে বলাৎকার করি। পরে তাকে শ্বাসরোধে করে হত্যা করি।

হত্যার পর গুজব ছড়াতে আবিরের মাথা শরীর থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করে ছালিমির হোসেন। পরে মাথাটি পাশের পুকুরে ফেলে দিই। এরপর আমরা মাদ্রাসায় ফিরে যাই। আদালতের বিচারক হত্যার জবানবন্দি লিপিবদ্ধ শেষে তাদের জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here