ফাইল ফটো

যশোর প্রতিনিধিঃ

যশোরে ভাইরাসজনিত পিপিআর রোগে আক্রান্ত হয়ে ছাগল মারা যাচ্ছে। গত এক সপ্তাহে প্রায় ২০টি ছাগলের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে শতাধিক ছাগল। এ নিয়ে দুশচিন্তায় পড়েছে গবাদিপশু পালনকারী খামারীরা। এ রোগ প্রতিকারে প্রাণী সম্পদ কর্তৃপক্ষের তৎপরতা নেই বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। আর প্রাণী সম্পদ কর্তপক্ষের দাবি পুরো জেলায় চলছে ভ্যাকসিন সংকট।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যশোরে জ্বর, পাতলা পায়খানা, মুখে ঘাঁ ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে বাড়িতে পোষা ছাগল মারা যেতে শুরু করেছে। গত এক সপ্তাহে সদরের পাঁচবাড়িয়া এলাকায় এধরণের অসুস্থতা নিয়ে চারটি ছাগল মারা গেছে। এমনকি ওই এলাকার আরো অনেক ছাগল এরকম অসুস্থতা নিয়ে ভুগছে। তবে অসুস্থতায় ভোগা ছাগলের চিকিৎসার জন্য প্রাণি সম্পদ বিভাগ থেকে কোন ধরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ ভোক্তভোগীদের।

সদর উপজেলা পাঁচবাড়িয়া এলাকায় কৃষক তুহিন হোসেন জানান, পিপিআর রোগে গ্রামে প্রতিদিনই দুই একটি ছাগল আক্রান্ত হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে প্রায় ৬-৭টি ছাগল মারা গেছে। কেউ কেউ পশু হাসপাতালে পশুর চিকিৎসা করাতে নিয়ে যাচ্ছে। রোগমুক্ত না হওয়ার কারণে অনেকেই কম দামে পশু বিক্রি করে দিচ্ছে। তিনি অভিযোগ করেন, বিষয়টি সংশিষ্টদের জানানো হলে করোনা পরিস্থিতির কারণে এই মুহূর্তে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয় বলে জাননো হয়েছে।

একই এলাকার কৃষক আমজাদ হোসেন বলেন, প্রথমে সর্দি, জ্বর ও পরে পাতলা পায়খানা হয়ে তাদের ছাগল মারা যাচ্ছে। আক্রান্ত ছাগলের উপসর্গ দেখে বোঝা যাচ্ছে এগুলো পিপিআর রোগে আক্রান্ত। আমরা প্রাণিসম্পদ বিভাগের চিকিৎসকদের রোগ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন দিতে আসতে বললে তারা আসছেন না। তাদের জানালেও গড়িমসি করেন। এমনকি করোনার এই প্রাদুর্ভাবে বাজারেও ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে না।

জেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. শফিউল আলম বলেন, রোগের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে কৃষকদের সতর্ক থাকতে প্রচারণা কার্যক্রম শুরু করেছে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর। পিপিআর ছোঁয়াচে রোগ। অসুস্থ্য পশুর হাঁচি, কাঁশি, পায়খানার মাধ্যমে সুস্থ ছাগলের দেহে এই রোগটি ছড়িয়ে পড়তে পারে। এছাড়াও পানি, খাদ্যের পাত্র এবং অসুস্থ প্রাণীর ব্যবহৃত জিনিসপত্র দিয়েও রোগটি ছড়াতে পারে। এমনকি শরীরে জীবাণু আছে। কিন্তু এখনো রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়নি সেসব প্রাণীর মাধ্যমে রোগ অন্যত্র ছড়িয়ে পড়তে পারে। এজন্য সুস্থ্য থাকা পশুকে আক্রান্ত পশুর থেকে আলাদা রাখতে হবে।

তিনি আরো বলেন, যশোরে পিপিআর রোগ প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পেলেও পিপিআর ভ্যাকসিন সংকটে রয়েছি। সরকার দেশ থেকে ছাগলের পিপিআর রোগ নির্মূলের জন্য একটি ভ্যাক্সিনেশন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। যশোরে চলতি মাস থেকে ছাগলের দেহে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরুর পরিকল্পনা থাকলেও বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারণে সেটি সম্ভব হয়নি।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here