রাজশাহী:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে রাজশাহী জেলা প্রশাসন দিল আফরোজ খুকির দায়িত্ব নিয়েছে। নিজের সম্পদ নিঃস্বদের মধ্যে বিলিয়ে দিয়ে সংগ্রামের জীবন বেছে নেন খুকি। ৩০ বছর ধরে শহরের পথে হেঁটে বিক্রি করছেন খবরের কাগজ।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল বলেন, ‘আমি তার সঙ্গে দেখা করেছি এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছি।’

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ‘দিল আফরোজ খুকির অর্থ সাহায্যের প্রয়োজন খুব একটা নেই, তার প্রয়োজন হলো সামান্য যত্ন, পরিবারের সদস্যদের ভালবাসা এবং সবার কাছ থেকে একজন মানুষ হিসেবে সম্মান পাওয়া।’

তিনি জানান, প্রশাসন কয়েকজন দিন-মজুরকে খুকির ঘরবাড়ি পরিষ্কার ও রঙের কাজে নিযুক্ত করেছে।  

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম তার জন্য নতুন পোশাকসহ বিভিন্ন উপহার সামগ্রী পাঠিয়েছিলেন।

দিল আফরোজ খুকির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তার বাড়িতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে এবং পানির লাইনের কাজ হচ্ছে।

মানুষজন এবং বিভিন্ন সংস্থা তার জন্য উপহার নিয়ে বাড়িতে আসছেন।

খুকির প্রতিবেশি নাহিদ আক্তার তানিয়া, যিনি একটি আর্ট স্কুলে কাজ করেন, তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। যিনি নিজেও পরিবারে নিগৃহীত হওয়ার পর একমাত্র সন্তান নিয়ে সমাজে আত্মমর্যাদার লড়াই করে যাচ্ছেন। 

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা মনে করছি খুকির পরিবারের কেউ তাকে দেখাশোনা না করায়, তানিয়া তার জন্য উপযুক্ত একজন।’

তানিয়া জানান, তার বাবা-মা নেই। খুকিকে আপা বলে ডাকলেও তাকে তিনি নিজের মায়ের মতোই দেখেন।

তানিয়া অভিযোগ করেন, খুকির দেখাশোনা করেন বলে খুকির পরিবারের সদস্যরা তাকে নানাভাবে হয়রানি করছেন, হুমকি দিচ্ছেন।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, তারা স্থানীয়দের খুকির যত্ন নিতে বলেছেন এবং তার উপর যে কোনও ধরনের হামলার বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে বলেছেন।

উপহার নিয়ে খুকির বাড়িতে ভিড় জমলেও, খুকি সেগুলো খুশি হয়ে গ্রহণ করছেন, তবে তিনি জানিয়েছেন এগুলো যাদের বেশি প্রয়োজন, তাদের বাড়ি পৌঁছে দেবেন।

কিছু সংস্থা সহায়তা নিয়ে এসেছিল এবং তাকে প্রতিশ্রুতি দিতে বলেছিল তিনি আর কখনো হকারের পেশায় থাকবেন না। কিন্তু খুকি অন্যান্য দিনের মতো আজও পেপার নিয়ে বেরিয়েছিলেন।

“কেন? হকার হলে লজ্জার কী আছে? কেন তারা এই কাজকে ঘৃণা করবে?” প্রশ্ন তোলেন খুকি।

তার সম্পত্তি নিয়েই বেশি উদ্বিগ্ন তিনি।

‘আমি মারা গেলে আমার সম্পত্তির কী হবে? আমি চাই কুষ্টিয়ায় দুটি স্কুলের মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য আমার সম্পত্তি দান করা হোক। আমার টাকা দিয়ে ওদের লেখাপড়া হবে। তাহলে আমি শান্তি পাব। আর কোন মানুষকে যেন কেউ অসম্মান না করে, আমি এটাই চাই,’ বলেন দিল আফরোজ খুকি।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here