বাগেরহাটঃ

সুপার সাইক্লোন বুলবুলের প্রভাবে বাগেরহাটের মোংলায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে। শনিবার বিকেল থেকে শুরু হয়েছে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে ভারী বর্ষণ। নদীতে পানির উচ্চতা বেড়েছে। জানমালের ক্ষতি এড়াতে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের মোংলা, শরণখোলা, রামপাল ও মোরেলগঞ্জের সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে হাজার হাজার মানুষ। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ৮৬ হাজার ৮৬০ জন আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া শত শত মাছ ধরা নৌকা ও ট্রলার উপকূল ছেড়ে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে।

এদিকে প্রশাসন ও রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা আশ্রিতদের মাঝে শুকনা খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে কাজ করছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে সরকারি ত্রাণ সামগ্রী। ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতায় প্রস্তুত রয়েছে রেড ক্রিসেন্টসহ সরকারি-বেসরকারি ১৭ হাজার ১৩০ জন স্বেচ্ছাসেবক। জেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৮৪টি মেডিকেল টিম।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার শেখ ফকর উদ্দিন জানান, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে সাগর উত্তাল। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে মোংলা বন্দরে জাহাজে পণ্য ওঠা-নামা ও জাহাজ আগমন-নির্গমন বন্ধ। মোংলা বন্দরে অবস্থানরত সব দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ জেটি থেকে সরিয়ে পশুর চ্যানেলে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সব ধরনের লাইটার জাহাজকে বন্দরের পশুর চ্যানেল ত্যাগ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এদিকে ঝড়ের পর উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নৌবাহিনীর ৫টি যুদ্ধজাহাজ ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন খুলনা নৌবাহিনীর কমান্ডার রিয়াল অ্যাডমিরাল আবু মুছা।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. মানুনুর রশীদ জানান, দুর্যোগ মোকাবিলায় কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, বন বিভাগ ও জেলা প্রশাসন সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। জেলার ২৩৪টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র খোলা রাখা হয়েছে। মোংলা বন্দরের ৩টি কন্ট্রোল রুম ছাড়াও ১০টি কন্ট্রোল রুম কাজ করছে। উপকূলীয় এলাকার জনসাধারণ দুপুরের পর থেকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আসতে শুরু করেছে। সন্ধ্যার আগেই শরণখোলা ও মোংলার অনেক আশ্রয়কেন্দ্রে উপকূলের মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩০ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার ও সাড়ে ৪ টন চাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. কামরুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, এখন পর্যন্ত উপকূলের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ৮৬ হাজার ৮৬০ জন আশ্রয় নিয়েছে।

অন্যদিকে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মাহমুদুল হাসান জানান, ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস মোকাবিলায় সুন্দরবন বিভাগের ৮৩টি বন অফিসের ৮০০ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে বন্যপ্রাণী রক্ষায় কাজ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here