বাগেরহাটঃ

বাগেরহাটে জেলা বিএনপির ৩৫ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এটিএম আকরাম হোসেন তালিমকে আহ্বায়ক ও মোজাফফর রহমান আলমকে সদস্য সচিব করে ওই কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়। নতুন এই কমিটিতে সদ্য বিদায়ী জেলা কমিটির সভাপতি এম এ সালামকে এক নম্বর সদস্য পদে রাখা হয়েছে। বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই আহবায়ক কমিটির অনুমোদন দেন। রোববার বিকেলে সদ্য বিলুপ্ত কমিটি শীর্ষ স্থানীয় নের্তৃবৃন্দ শহরের সরুই এলাকার বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে এই কমিটি প্রত্যাখান করে নতুন আহবায়ক কমিটি দিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। এসময় বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশ থেকে জেলা বিএনপির সদ্য সাবেক সভাপতি এম এ সালাম নতুন কমিটি প্রত্যাখান করে কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন। সদ্য ঘোষিত কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি দিতে কেন্দ্রকে ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেন সদ্য বিদায়ী সভাপতি এম এ সালাম।

জেলা বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, ২০০৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে দিয়ে এম এ সালাম দলের হাল ধরেন। সেই থেকে তিনি দলটির নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। এরপর কিছুদিন ধরে বিএনপির মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। জেলা যুবদলের কমিটি গঠনের পর থেকে দুই পক্ষ আলাদা আলাদা কর্মসূচি পালন করতে শুরু করে। শনিবার জেলা বিএনপির সভাপতি এম এ সালাম এবং সাধারণ সম্পাদক আলী রেজা বাবুর নেতৃত্বাধীন কমিটি ভেঙে কেন্দ্র নতুন আহ্বায়ক কমিটি দেয়ায় বিরোধ আরও চাঙ্গা হলো বলে মনে করেন ওই নেতারা।

নতুন এই কমিটির আহ্বায়ক এ টি এম আকরাম হোসেন তালিম সালাম বিরোধী। তিনি এক সময় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আর সদস্য সচিব মোজাফফর রহমান আলম জেলা বিএনপি’র সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি এম এ সালামের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তিনি সদ্য বিলুপ্ত হওয়া কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন।

নতুন জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটিতে কামরুল ইসলাম গোরা, শমসের আলী মোহন, খাদেম নিয়ামুল নাসির আলাপ ও ড. ফরিদুল ইসলামকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে। বাকিরা সব সদস্য।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সদ্য বিলুপ্ত হওয়া জেলা কমিটির সভাপতি এম এ সালাম বলেন, দুর্দিনে দলের হাল ধরে ছিলাম। বিভিন্ন সময়ে সরকার বিরোধী আন্দোলনে এই নেতারা কোথায় ছিলেন? যাকে দলের আহ্বায়ক করা হয়েছে তিনি এক সময়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি ১৯৯৬ সাল থেকে বিএনপিকে সাংগঠনিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন। কমিটিতে স্থান পাওয়া অনেক নেতা নিষ্ক্রীয় ও প্রবাসী। বিগত দিনে কেন্দ্র কোন কর্মসূচি দিলে সেসময়ে তাদের কাউকে পাশে পাওয়া যায়নি। যাদের কমিটিতে রাখা হয়েছে তাদের অনেকেই এলাকায়ও থাকেন না। এই কমিটির অনেকেই অন্তত ২০ বছর আগে দল ত্যাগ করেছেন। আবার মৃত ব্যক্তিকেও কমিটিতে অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে। দলের অধিকাংশ নেতাকর্মী এই কমিটিকে মেনে নিতে পারছেন না। তারা এই কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন। আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে কেন্দ্র এই কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি না দিলে বাগেরহাট জেলায় কঠোর আন্দোলনের হুমকি দেন এই বিদায়ী সভাপতি।

তিনি আরো বলেন, কমিটিতে এমন লোক নেওয়া হয়েছে ক্যুখ্যাত রাজাকার পরিবারের সদস্যকে আমরা রাজাকার মুক্ত বাগেরহাট জেলা বিএনপি গড়তে চাই । এই কমিটিতে ফকিরহাট উপজেলার সাবেক সভাপতি মৃত শফিকুর রহমান টোকনের নাম রয়েছে। এই কমিটি থাকলে আমরা সাংগঠনিকভাবে দূর্বল হয়ে যাব।

নতুন কমিটির আহ্বায়ক এ টি এম আকরাম হোসেন তালিম সবুজদেশ নিউজ ডটকমকে বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া বিএনপিকে বাগেরহাটে কুক্ষিগত রেখেছিলেন আগের সভাপতি এম এ সালাম। এই কমিটির মধ্যে দিয়ে বিএনপি তার ভারমুক্ত হলো। দলের দলবিমূখ নেতাকর্মীরা নতুন এই কমিটি পেয়ে দারুণ খুশি। নতুন এই কমিটি আগামীতে দলকে সাংগঠনিকভাবে আরও শক্তিশালী করবে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনকে বেগবান করবে বলে মনে করেন এই নেতা।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here