এস এম সামছুর রহমান, বাগেরহাট :

বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনের উপ-নির্বাচন আগামী ২১ মার্চ। ইতিমধ্যে জেলা সদরসহ ওই আসনের গ্রামের চায়ের দোকান ও মোড়ে মোড়ে ছড়িয়ে পড়েছে নির্বাচনী আলোচনা। কে হবেন কোন দলের প্রার্থী? বিশেষ করে এই আসনের সদ্য প্রয়ত বার বার নির্বাচিত জনপ্রিয় সংসদ সদস্যে ডা: মোজ্জাম্মেল হোসেনের উত্তরসুরী কে হচ্ছেন এটাই সবার মুখে মুখে। আর সময় যতই ঘনিয়ে আসছে এমন আলোচনা প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে।

২০০৮ সাল থেকে এই আসনের নির্বাচিত এমপি ছিলেন, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মোজাম্মেল হোসেন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাট জেলার অন্য তিনটি আসনে আওয়ামীলীগ দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্তরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হলেও এই আসনে বিজয়ী হতে ডা. মোজাম্মেল হোসেনকে নিজ দলের দু’জন বিদ্রোহী প্রার্থীকে মোকাবেলা করতে হয়েছিলো। আর একাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি ১৯ দলীয় জোট প্রার্থী অধ্যক্ষ আব্দুল আলীমকে (জামায়াত) পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

১০জানুয়ারি বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. মোজাম্মেল হোসেনের মৃত্যু হলে আসনটি শূন্য হয়। গত ৬ ফেরুয়ারি নির্বাচন কমিশন এ আসনে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে।

বাগেরহাট-৪ আসনে রয়েছে আওয়ামী লীগের হ্যাবিওয়েট একাধিক নেতা। এর ফলে এখানে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল দীর্ঘদিনের। তবে মানব সেবার মাধ্যমে রাজনীতিতে আসা ডাক্তার মোজাম্মেল হোসেনের ব্যপক জনপ্রিয়তার কারনে বার বার আওয়ামী লীগ তাকেই মনোনয়ন দিয়েছে।

এই আসনে আওয়ামী লীগের পক্ষে দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করে জমা দিয়েছে ১১ জন। তারা হলেন, বিগত বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক সমাজ সেবক ডাঃ মোশারফ হোসেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাড. আমিরুল আলম মিলন, সাবেক সংসদ সদস্য ডা: মোজাম্মেল হোসেনের পুত্রবধু ইসমত আরা শিরিন চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নকীব নজিবুল হক নজু, মালেশিয়া আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এমআর জামিল হোসাইন, পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি অধ্যাপক আব্দুর রহিম খান, অ্যাড. প্রবীর রঞ্জন হালদার, মিজানুর রহমান জনি, এস এম মনিরুল ইসলাম ও এস এম রাজু।

এই আসনে বিএনপির পক্ষে দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন ৪জন। তারা হলেন, সাবেক জেলা বিএনপির নেতা কাজী খায়রুজ্জামান শিপন, ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত বীরমুক্তিযোদ্ধ সামছুল আলম তালুকদারের মেয়ে অ্যাড. ফারহানা জাহান নিপা ও মনিরুল ইসলাম ফরাজী।

তবে আওয়ামী লীগের মনোয়ন দৌড়ে পরিক্ষিত আওয়ামী লীগ নেতা বিশিষ্টসমাজ সেবক ডাঃ মোশারফ হোসেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাড. আমিরুল আলম মিলন এগিয়ে রয়েছেন বলে আওয়ামী লীগের বিগত জেলা কমিটির একাধিক নেতা মনে করছেন। সাবেক সংসদ সদস্য ডা: মোজাম্মেল হোসেনের পুত্রবধু ইসমত আরা শিরিন চৌধুরীও রয়েছেন এই তালিকায় ।

এবিষয়ে ডা: মোশারফ হোসেন বলেন, সারা জীবন মানুষের সেবা করেছি। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের বিভিন্ন আন্দোলনে নিজের জীবনের কথা না ভেবে সক্রিয় অংশ গ্রহন নিয়েছি। আওয়ামী লীগের বিচক্ষণ সভানেত্রী শেখ হাচিনা নিশ্চয় মুল্যায়ন করবেন।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ বলেন, ছাত্রলীগের নেতৃত্বে থাকার সময় ও পরে মোরেলগঞ্জ-শরণখোলার মানুষের সুখ-দুঃখে পাশে থেকে কাজ করেছি। দল মনোনয়ন দিলে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে এই আসনের প্রয়ত সংসদ সদস্য ডাঃ মোজাম্মেল হোসেন অসমাপ্ত কাজ শেষ করবো।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যা অ্যাড. আমিরুল আলম মিলন বলেন, জীবনের এই পর্যন্ত সংগঠনের জন্য রক্ত দেয়া ও যাবজ্জীবন সাঁজা প্রাপ্ত হয়ে কারাগারে গিয়েছি। সারা জীবন মানুষের ভালবাসা নিয়ে রাজনীতি করেছি। মানুষের ভালবাসাই আমার সম্বল। দল আমাকে মনোনয়ন দিলে এই আসনের মানুষের জন্য বাকী জীবন কাজ করে যাব।

বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাসী কাজী খায়রুজ্জামান শিপন, ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির, অ্যাড. ফারহানা জাহান নিপা এই আসনে অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ন নির্বাচন হলে বিএনপির প্রার্থী বিজয়ী হবে বলে জানান।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here