বিশেষ প্রতিনিধিঃ

করোনা ভাইরাস বিশ্বজুড়ে মহামারী আকার ধারণ করেছে। বাংলাদেশেও অনেকে আক্রান্ত হয়েছে। প্রাণ হারাতে হয়েছে কয়েকজনকে। এই ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সারাদেশেই অঘোষিত লকডাউন চলছে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে সারাদেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ শহর ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা। ঝিনাইদহ-মাগুরা-কুষ্টিয়া চুয়াডাঙ্গা ও যশোর জেলা মাঝখানে অবস্থিত এই উপজেলাটি ব্যবসার দিক দিয়ে বেশ জনপ্রিয়। এছাড়াও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সবচেয়ে বড় পশুর হাট কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজারে অবস্থিত।

ভোর থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত শহরে বেশ কর্মচঞ্চলতা দেখা যায়। কিন্তু মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে গত ২৬ মার্চ থেকে এই শহরটিতে নেমে এসেছে নিস্তব্ধ নীরবতা। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনসমাগম এড়াতে সকাল ৬ টা থেকে ৯ টা ও বিকেল ৩ টা থেকে ৫ টা পর্যন্ত নিত্য প্রয়োজনীয় দোকান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সময় কিছু কিছু মানুষের চলাচল দেখা গেলেও অন্য সময়টিতে তেমন জন সমাগম দেখা যাচ্ছে না। আর এই অঘোষিত লকডাউনে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষেরা। সন্ধ্যা হলেই শহরটিতে নেমে আসে একদমই নিস্তব্ধ নীরবতা আর চাপা আতংক। এর আগে কখনও এমন চিত্র দেখা যায়নি।

সমাজের অসহায় ও দুস্থ মানুষের মাঝে সরকারি-বেসরকারিভাবে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন।

সামাজকি দুরত্ব নিশ্চিত করতে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা নিয়মিত মাঠে টহল দিচ্ছেন। অপ্রয়োজনে বাইরে ঘোরাঘুরি করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতে অর্থদন্ড করা হচ্ছে। করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন হওয়ার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

শহরে আলাউদ্দিন নামের এক রিক্সা চালক জানান, রিক্সা না চালালে কিভাবে সংসার চলবে। সরকার চাল-ডাল দিচ্ছে কিন্তু মসলা তো দিচ্ছে না। তাছাড়া মাসে ২ হাজার টাকার ওষুধ লাগে। এটা কে দিবে। এজন্য রিক্সা চালাতে হচ্ছে। তেমন ভাড়াও হচ্ছে না।

ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডাঃ সেলিনা বেগম মঙ্গলবার সকালে জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘন্টায় নতুন ১২জন সহ মোট ২৬৩ জন বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছে। এ পর্যন্ত ৩২ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এরমধ্যে মাত্র ২ জনের রিপোর্ট পাওয়া গেছে। তাদের রিপোর্টে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়নি।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুবর্ণা রাণী সাহা জানিয়েছেন, সরকারি-বেসরকারিভাবে অসহায় মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত আছে। সবার বাড়ি বাড়ি খাদ্য সামগ্রী পৌছে দেওয়া হবে। অপ্রয়োজনে কাউকে বের না হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here