সবুজদেশ ডেক্সঃ  বেশ কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান মন্ত্রী, সাংসদসহ প্রভাবশালী নেতা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। প্রথম আলোর প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যমতে, ঢাকা মহানগরসহ সারা দেশের ৪০টি জেলার ৩১৭ জন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। দলের মনোনয়ন না পাওয়া, জোটের শরিকদের ছাড়, নতুনদের সুযোগ দিতে এসব মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

চাঁদপুর-২ (মতলব দক্ষিণ ও উত্তর) আসনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বর্তমান সাংসদ, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। এ আসনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন রুহুল দলের মনোনয়ন পেয়েছেন। চলতি আওয়ামী লীগের সময়ে জামাতার কারণে আলোচনায় এসেছিলেন মায়ার পরিবার। তাঁর জামাতা র‍্যাব-১১–এর অধিনায়ক তারেক সাঈদ মোহাম্মদ নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত সাত খুন মামলার অন্যতম আসামি। বর্তমানে তিনি কারা হেফাজতে রয়েছেন।

জামালপুরের টানা পাঁচবারের সাংসদ ও সাবেক ভূমিমন্ত্রী রেজাউল করিম হীরা জামালপুর-৫ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তিনি দলের মনোনয়ন পাননি। দীর্ঘদিন থেকেই ওই আসনে প্রার্থী বদলের দাবি জানাচ্ছিলেন স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। তবে এবার ওই আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মোজাফফর হোসেন। জামালপুরে বাড়ি হলেও তিনি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকাতেই ব্যবসা করেন।

বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের প্রতীক ধানের শীষ না পেয়ে ভোলা-১ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ ও তাঁর মা রেবা রহমান। এ আসনে গত শনিবার গভীর রাতে ভোলা জেলা বিএনপির সভাপতি গোলম নবী আলমগীরকে ধানের শীষের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

নীলফামারী-৩ (জলঢাকা) আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান সাংসদ গোলাম মোস্তফাও মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন কিনেছিলেন। এ আসন থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির মেজর (অব.) রানা মোহাম্মদ সোহেল। নীলফামারীতে বাড়ি হলেও রানা মোহাম্মদ দীর্ঘদিন ঢাকাতেই থাকেন।

দলের হিসাব–নিকাশে রংপুর-২ আসন (তারাগঞ্জ-বদরগঞ্জ) থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা জিয়াউদ্দিন বাবলু। এ আসনে মহাজোটের বাইরে গিয়ে লাঙ্গল মার্কায় লড়বেন আরেক জাতীয় পার্টির নেতা আসাদুজ্জামান চৌধুরী শাবলু।

জঙ্গিবাদে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) থেকে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া শাকিলা ফারজানার বিরুদ্ধে। শেষ পর্যন্ত গতকাল তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে লড়বেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম।

বগুড়া-১ (সোনাতলা-সারিয়াকান্দি) জেলা বিএনপির উপদেষ্টা মো. শোকরানা। দলীয় মনোনয়ন পাননি তিনি। ওই আসনে কাজী রফিকুল ইসলামকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি।

কোন জেলায় কতজন প্রত্যাহার করলেন

ঢাকা মহানগর ২২ জন, ঝালকাঠি ২, দিনাজপুর ১৬, লালমনিরহাট ৪, বগুড়া ১৭, চট্টগ্রাম ১৯, বরগুনা ৪, শেরপুর ৪, জামালপুর ১২, নেত্রকোনা ৫, চাঁদপুর ৯, বরিশাল ১১, টাঙ্গাইল ২৩, ফরিদপুর ৫, পটুয়াখালী ৯, মাদারীপুর ২, পাবনা ৮, পঞ্চগড় ১, পিরোজপুর ৩, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৭, সুনামগঞ্জ ৯, মৌলভীবাজার ৫, সিলেট ১২, হবিগঞ্জ ৭, মেহেরপুর ১, কুমিল্লা ৭, বাগেরহাট ৪, খুলনা ৯, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৬, রংপুর ৫, বগুড়া ১৭, চুয়াডাঙ্গা ২, জয়পুরহাট ১, সাতক্ষীরা ৫, নীলফামারী ৬, নাটোর ৭, সিরাজগঞ্জ ২, ভোলা ৬, রাজশাহী ৮ ও গাইবান্ধা ১৬ জন।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here