ঝিনাইদহঃ
ঘন কুয়াশা আর মৃদু শৈত্যপ্রবাহে শীতে বিপর্যস্ত ঝিনাইদহের মানুষ। রাতের আঁধার কেটে বেলা বেড়ে ঘড়ির কাঁটা পৌঁছে গেছে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে। তবুও বোঝার উপায় নেই দিনের আলো ফুটেছে। ঘন কুয়াশায় চারপাশ অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন কর্মজীবীরা।
প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হননি অনেকে। কোথাও কোথাও আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা চলছে। ঘন কুয়াশার কারণে মহাসড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে।
এদিকে, তীব্র শীতে উষ্ণতার জন্য গরম কাপড় কিনতে ফুটপাতে ভীড় করছেন ছিন্নমুল মানুষেরা।
সদর উপজেলার উদয়পুর গ্রামের একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে গিয়ে দেখা গেল ঠান্ডায় জড়সড় অবস্থা তাদের। গৃহকর্মী লিমা খাতুন বলেন, গত দশ বছরের মধ্যে এমন ঠান্ডা আর পড়েনি। ঠান্ডায় দিশেহারা অবস্থা। লেপের নিচ থেকে বের হতে ইচ্ছা করে না। তিন চারটা কাপড় পরি, মোজা পরে কম্বলের নিচে থাকি, তারপরও ভয়ঙ্কর ঠান্ডা লাগছে। তাই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছি।
ওই গ্রামের বৃদ্ধ কাশেম মন্ডল (৬০) বলেন, সকাল গড়িয়ে দুপুর হতে হচ্ছে। তবুও রোদের দেখা পেলাম না। শীত জোঁকের মতো শরীরে কামড় দিয়ে ধরছে। শীত সহ্য করতে পারছি না।
তিনি বলেন, আমাকে একটা সরকারি কম্বল দিয়েছে কিন্তু তাতে শরীর গরম হচ্ছে না। তাই আগুন জ্বালিয়ে তাপ নিচ্ছি।
কৃষক রহমত মিয়া বলেন, শীতের কারণে আমরা ঘরে বসে থাকলে সমস্যা শুধু আমাদের হবে না গোটা দেশের সমস্যা। মাঠের পর মাঠ ফসল না বুনলে মানুষ খাবে কী। প্রতিবছর এভাবেই শীতের সঙ্গে লড়াই করে ফসল ফলাতে হয়।
রিকশাচালক হারিস মিয়া বলেন, আমরা দিন আনি দিন খাই। রিকশা চালিয়ে জীবনযাপন করি। কিন্তু কুয়াশা যেমন তার চেয়ে ঠান্ডাই বেশি। কাজে বের হলেও মানুষ রিকশায় ওঠে না।
ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ বলেন, দরিদ্র মানুষের শীতের কষ্ট নিবারণের চেষ্টা চালাচ্ছি। সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে।