শ্রেণিকক্ষে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা জানাজানি হলে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। (ইনসেটে) অভিযুক্ত শিক্ষক মাজেদুর রহমান

রাজশাহীঃ

রাজশাহীর পুঠিয়ায় প্রাইভেট পড়ানোর নামে শিক্ষক কর্তৃক জোরপূর্বক ৫ম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে (১১) শ্রেণীকক্ষে একাধিকবার ধর্ষণের চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে এলাকাবাসীর ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক মাজেদুর রহমানকে গণধোলই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছেন। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মাঝে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।

অভিযুক্ত মাজেদুর রহমান উপজেলার শিবপুরহাট-রঘুরামপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা রহমতউল্লাহর ছেলে ও রঘুরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। গত মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) রাতে এ ঘটনা ঘটে।

ভূক্তভোগী ওই স্কুলছাত্রীর বাবা বলেন, সামনে পিএসসি সমাপনী পরীক্ষা, তাই স্কুলের শিক্ষক মাজেদুর রহমান আমার মেয়ের ভালো রেজাল্ট করাতে তার কাছে প্রাইভেট পড়তে বলে। ভালো ফলাফলের আশায় মেয়েটি গত মাস থেকে তার কাছে প্রাইভেট পড়তো। সম্প্রতি দুর্গাপুজার ছুটিতে প্রাইভেট পড়ানোর নামে ফাঁকা শ্রেণিকক্ষে মেয়েকে গত কয়েকদিন যাবত জোরপূর্বক ধষর্ণের চেষ্টা করে আসছে শিক্ষক মাজেদুর রহমান। আর এ ঘটনা কাউকে বললে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিত সে।

তিনি আরো বলেন, এরপর থেকে মেয়ে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। মেয়ের কাছে স্কুলে না যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে সে বলে, শিক্ষক তাকে শারীরিক অত্যাচার করে। আমি মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সকালে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতিকে জানালে তারা কিছু টাকা নিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়া উপদেশ দেয়। কিন্তু আমি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।

শিক্ষার্থীদের অভিভাবক আব্দুল হক ও রাতুল হাসান সবুজ বলেন, শিক্ষক মাজেদুর রহমান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হয়ে চরিত্রহীন ভক্ষক হয়ে উঠেছে। এমন শিক্ষকের কাছে আমাদের সন্তানদের নিরাপত্তা কি? তার বিরুদ্ধে এখন অনেক শিক্ষার্থীরা নানা অপকর্মের অভিযোগ তুলছেন। আবার শুনছি এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে মেয়েটির পরিবারকে হুমকিও দিচ্ছে। আমরা এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই।

রঘুরামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, গ্রামবাসী ওই শিক্ষকের পাশাপাশি আমাকেও মারধর করেছেন। কিন্তু আমি এই বিষয়টি আগে জানতাম না। তবে অপরাধ যে করবে তার সাজা হোক এটা আমিও চাই।

এ বিষয়ে স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান বলেন, এ ঘটনাটি গত রাতে লোক মুখে শুনেছি। বিষয়টি গত কয়েকদিন আগের। তবে দু’পক্ষের কেও আমাকে জানায়নি। যদি শিক্ষক এমন ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তবে তার বিরুদ্ধে অব্যশই আইনি ব্যবস্থা নেয়া হোক।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মীর মোহাম্মদ মামুন উর রহমানের সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে পুঠিয়া থানার ওসি রেজাউল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ওই মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে অভিযুক্ত শিক্ষক মাজেদুর রহমানকে আসামী করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করা হয়েছে। তাকে বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here