ফারুক নোমানীঃ

রাগের সময় নিজেকে যিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন প্রকৃতপক্ষেই তিনি মহাবীর। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার এই ক্ষমতা সবার মধ্যে থাকে না। এ গুণ যাদের থাকে তারা বড়ই সৌভাগ্যবান। সফলতার চূড়ান্ত পর্যায়ে তারাই পৌঁছতে পারেন। সমাজের চোখে তারা হন সম্মানিত, মর্যাদাবান। আর দয়াময় আল্লাহ তাঁর প্রিয়ভাজনদের আলোচনা করতে গিয়ে এই সহনশীলদের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন। তাই একজন বিশ্বাসী মুমিনের জন্য সহনশীলতা বা পরম সহিষ্ণুতা বড়ই অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য। আল্লাহ বলেন- ‘আর দয়াময় আল্লাহর বান্দা তারাই, যারা যমীনে অত্যন্ত বিনম্রভাবে চলাফেরা করে এবং তাদেরকে যখন অজ্ঞ ব্যক্তিরা সম্বোধন করে, তখন তারা বলে, সালাম।’ (সুরা ফুরকান: ৬৩)

এ আয়াতের শেষাংশে লক্ষ করুন, আল্লাহ তাঁর প্রিয়ভাজন বান্দাদের গুণ উল্লেখ করে বলেছেন- ‘এবং তাদেরকে যখন অজ্ঞ ব্যক্তিরা সম্বোধন করে, তখন তারা বলে, সালাম।’ অর্থাৎ যখন জাহেল বা মূর্খ ব্যক্তিরা তাদের সাথে কথা বলে, তখন তারা বলে- ‘সালাম’। এখানে জাহেল শব্দের অর্থ বিদ্যাহীন, নিরক্ষর ব্যক্তি নয়; বরং যারা মূর্খতার কাজ ও মূর্খতাপ্রসূত কথাবার্তা বলে, যারা মূর্খতার আচরণ করে, জাহেলী কালচারে অভ্যস্ত, যারা দিতে জানে না মানুষের মর্যাদা, বোঝে না সম্মানিত মানুষের সম্মান, ভদ্রজনের সাথে যারা করে অশালীন ও অসৌজন্যমূলক ব্যবহার, এদের অক্ষরজ্ঞান থাকলেও বা প্রচলিত অর্থে শিক্ষিত হলেও আল্লাহর কাছে এরা চরম মূর্খ। দয়াময় আল্লাহর প্রিয়বান্দাদের বৈশিষ্ট্য হলো এ জাতীয় মূর্খরা যখন তাদেরকে সম্বোধন করে তখন তারা ‘সালাম’ বলে এড়িয়ে যায়।

মূর্খদের এড়িয়ে যাওয়া সহনশীলতার শিক্ষা

অজ্ঞরা যেহেতু মানুষের মর্যাদা অনুপাতে কথা বলতে পারে না, তাই কোন অসংলগ্ন, অশালীন, অমার্জিত কথা ও আচরণ তাদের থেকে প্রকাশ পাওয়া খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। যা কোন অপ্রীতিকর ঘটনার সূত্রপাতও করতে পারে। তাই তারা তাদের সাথে বাকবিতণ্ডা, তর্কাতর্কি, কথা কাটাকাটি ও ঝগড়ায় না গিয়ে তাদেরকে সালাম দিয়ে বিদায় নেয়। কারণ, মুমিন বান্দা গালির জবাবে গালি এবং দোষারোপের জবাবে দোষারোপ করে না। তারা মন্দের উত্তর মন্দ দিয়ে দেয় না। যেমন কুরআনের অন্য জয়গায় বলা হয়েছে-‘আর যখন তারা কোন অসার কথা শোনে, তা উপেক্ষা করে যায়। বলে, আমাদের কাজের ফল আমরা পাবো এবং তোমাদের কাজের ফল তোমরা পাবে। সালাম তোমাদের, আমরা অজ্ঞদের সাথে জড়াতে চাই না।’ (সূরা কাসাস: ৫৫)

এখানে ‘সালাম’ বলতে অভিবাদন বা সাক্ষাতের সালাম নয়; বরং বিদায় বা সঙ্গ ত্যাগ করার সালাম বুঝানো হয়েছে। তথা সালাম বলা মানে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া ও তর্ক-বিতর্ক ছেড়ে দেওয়া। অর্থাৎ, ঈমানদাররা জাহেল ও মুর্খ লোকদের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়ে না। বরং তারা এমতাবস্থায় এড়িয়ে চলার পদ্ধতি অবলম্বন করে এবং ফালতু বিতণ্ডা বর্জন করে।

পাঠক, এ আয়াতে সহনশীলতার কথা আল্লাহ একটু ঘুরিয়ে বলেছেন। আর তা হলো মূর্খরা যখন তাদের সাথে ঝগড়া, তর্ক ও বাকবিতণ্ডায় জড়ায় তখন তারা না রেগে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করেন। কোন কঠিন কথা ও অমার্জিত আচরণের পরও তার তার উত্তর এমন খারাপ ও নোংরা পদ্ধতিতে না দিয়ে কথাটারই ইতি টানেন। আর এমনটা সবাই করতে পারে না। এখানেই ধৈর্য ও সহনশীলনতার পরিচয়। মূর্খের মন্দ কথার উত্তরে নিজেকে সংযত রাখা সবার হয়ে ওঠে না। ফলে অনেক অপ্রিয় ঘটনাও সংঘটিত হয়ে যায়। তাই আল্লাহর বিশ্বাসী বান্দাদের করণীয় হলো, তাঁরা মূর্খের সংগ ত্যাগ করবেন ও মূর্খরা যখন তাদেরকে সম্বোধন করে কথা বলতে চায় তখন তাদেরকে সালাম দিয়ে এড়িয়ে যাবেন। আর এর মাধ্যমেই আল্লাহ বিশ্বাসীদের পরম সহিষ্ণুতার সবক শিখিয়েছেন।

পবিত্র কুরআনের অন্য আয়াতেও আল্লাহ তাঁর প্রিয় রাসুলকে এই জাহেল বা মূর্খদের এড়িয়ে চলার আদেশ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন- ‘মানুষের (চরিত্র ও কর্মের) উৎকৃষ্ট অংশ গ্রহণ করুন, সৎকাজের নির্দেশ দিন এবং অজ্ঞদেরকে এড়িয়ে চলুন। (সুরা আরাফ: ১৯৯)

আলোচ্য আয়াতে রাসূলুল্লাহ সা. কে সর্বোত্তম চরিত্রের হেদায়াত দেয়া হয়েছে। তাতে তিনটি বাক্য রয়েছে। প্রথম নির্দেশ হচ্ছে, আপনি ‘আফউ’ গ্রহণ করুন। এখানে উল্লেখিত ‘আফউ’ শব্দটির আরবী অভিধান মোতাবেক একাধিক অর্থ হতে পারে এবং একত্রে সব ক’টি অর্থই প্রযোজ্য হতে পারে। সে কারণেই তাফসীরবিদ আলেমগণের বিভিন্ন দল বিভিন্ন অর্থ গ্রহণ করেছেন।

এক. অধিকাংশ তাফসীরকারক যে অর্থ নিয়েছেন তা হল এই যে, ‘আফউ’ বলা হয় এমন প্রত্যেকটি কাজকে, যা সহজে কোন রকম আয়াস ব্যতিরেকে সম্পন্ন হতে পারে। তাহলে বাক্যটির অর্থ দাঁড়ায় এই যে, আপনি এমন বিষয় গ্রহণ করে নিন, যা মানুষ অনায়াসে করতে পারে। অর্থাৎ শরীআত নির্ধারিত কর্তব্য সম্পাদনে আপনি সাধারণ মানুষের কাছে সুউচ্চমান দাবী করবেন না; বরং তারা সহজে যে পরিমাণ আমল করতে পারে আপনি তাই গ্রহণ করে নিন। মুফাসসিরগণের মতে, এ আয়াতটিতে আল্লাহ্ তা’আলা রাসূলুল্লাহ সা.কে মানুষের আমল-আখলাকের ব্যাপারে সাধারণ আনুগত্য কবুল করে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। অর্থাৎ মানুষ যা করতে পারে তার প্রকাশ্যরূপ দেখেই আমি সন্তুষ্ট থাকব। তাদের প্রকৃতি যেটা করতে সমর্থ নয় সেটা তাদের উপর চাপিয়ে দেব না। তাদের ভুল-ত্রুটি হলে সেটা উপেক্ষা করে যাব। তাদের উপর কঠোরতা আরোপ করব না।

দুই. ‘আফউ’ এর অপর অর্থ ক্ষমা করা এবং অব্যাহতি দেয়াও হয়ে থাকে। তাফসীরকারক আলেমগণের এক দল এক্ষেত্রে এ অর্থেই বাক্যটির মর্ম সাব্যস্ত করেছেন এই যে, আপনি পাপী-অপরাধীদের ক্ষমা করে দিন।

আয়াতের দ্বিতীয় নির্দেশ হচ্ছে, আপনি ‘উরফ’ এর নির্দেশ দিন। এখানে ‘উরফ’ শব্দটির অর্থ, সৎকাজ বা পরিচিত কাজ। যে কোন ভাল ও প্রশংসনীয় কাজই এর অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ যেসব লোক আপনার সাথে মন্দ ও উৎপীড়নমূলক আচরণ করে, আপনি তাদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করবেন না; বরং তাদেরকে ক্ষমা করে দিন। কিন্তু সেই সাথে তাদেরকে সৎকাজেরও উপদেশ দিতে থাকুন। অর্থাৎ অসদাচরণের বিনিময় সদাচরণ এবং অত্যাচারের বিনিময় শুধুমাত্র ন্যায়নীতির মাধ্যমেই নয়; বরং অনুগ্রহের মাধ্যমে দান করুন।

আয়াতের তৃতীয় নির্দেশ হচ্ছে, আপনি জাহেল বা মূখদেরকে উপেক্ষা করুন। যারা জাহেল তাদের কাছ থেকে আপনি দূরে সরে থাকুন। মর্মার্থ এই যে, আপনি অত্যাচারের প্রতিশোধ না নিয়ে তাদের সাথে কল্যাণকর ও সৌহার্দ্যপূর্ণ ব্যবহার করুন এবং একান্ত কোমলতার সাথে তাদেরকে সত্য ও ন্যায়ের বিষয় বাতলে দিন। কিন্তু বহু মূর্খ এমনও থাকে যারা এহেন ভদ্রোচিত আচরণে প্রভাবিত হয় না; বরং এমতাবস্থায়ও তারা মূর্খজনোচিত রূঢ় ব্যবহারে প্রবৃত্ত হয়।

এমন ধরনের লোকদের সাথে আপনার আচরণ হবে যে, তাদের হৃদয় বিদারক মূর্খ-জনোচিত কথা-বার্তায় দুঃখিত হয়ে তাদেরই মত ব্যবহার আপনিও করবেন না; বরং তাদের থেকে দূরে সরে থাকবেন। তাফসীরশাস্ত্রের ইমাম ইবন কাসীর রহ. বলেন-‘দূরে সরে থাকার অর্থ মন্দের প্রত্যুত্তরে মন্দ ব্যবহার না করা। তবে এর অর্থ এই নয় যে, তাদের হেদায়াত ও আলোর পথ দেখানোর কাজও বর্জন করতে হবে।’

রাগ নিয়ন্ত্রণই প্রকৃত বীরত্ব

রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা সাধারণ কোন ব্যাপার নয়। সবার পক্ষেও তা সম্ভব নয়। প্রকৃত বীররাই কেবল তা পারেন। পবিত্র কুরআনে তাই বলা হয়েছে-‘আর অবশ্যই যে ধৈর্য ধারণ করে এবং ক্ষমা করে দেয়, নিশ্চয় তা দৃঢ় সংকল্পেরই কাজ।’ (সুরা শুরা: ৪৩)

আর হাদীসে একথাটাকেই স্পষ্ট করে বলা হয়েছে। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন- ‘সেই ব্যক্তি প্রকৃত বীর নয়, যে কুস্তিতে বিজয়ী হয়। প্রকৃত বীর সেই; যে ক্রোধের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।’ ( সহীহ বুখারী ৬১১৪, সহীহ মুসলিম ২৬০৯)

আবু হুরায়রা রা. থেকে অন্য আরেকটি সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, নবীজী সা. বলেছেন- ‘সেই ব্যক্তি প্রকৃত বীর নয়, যে কুস্তিতে বিজয়ী হয়। লোকেরা জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রসুল, তাহলে প্রকৃত বীর কে? তিনি বললেন, প্রকৃত বীর সেই; যে ক্রোধের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।’ (সহীহ মুসলিম ২৬১০)

পাঠক, অন্যকে ধরাশায়ী করে হারিয়ে দেয়ার ভেতরে কিন্তু প্রকৃত বীরত্ব নেই, নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারাটাই প্রকৃত বীরত্ব। তাই আল্লাহর বিশ্বাসী বান্দারা রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে দয়াময় আল্লাহর কাছে সেই বীরত্বেরই পরিচয় দেন।

সহনশীলরা হারেন না

চর্মচোখে সহনশীলদেরকে পরাজিত মনে হলেও, তাঁরাই প্রকৃত বিজয়ী। তাঁরা মূলত হারেন না, পরাজিতও হন না। তাঁরা আসলে মন্দ লোকের অন্যায় আচরণে কষ্ট পেয়েও নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে মহাসফলতা অর্জন করেন। মুর্খ লোক যখন তাঁদেরকে গালমন্দ করে ব্যথিত করে, অমার্জিত আচরণ ও অসৌজন্য কথা বলে তাঁদের ক্ষুদ্ধ করে, তবুও যদি বিশ্বাসীরা ধৈর্য ধরেন, নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করেন, তবে আল্লাহই এই সহনশীল মুমিন বান্দাদের পক্ষ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করেন। কুরআনে তিনি বলেছেন-‘ নিশ্চয় আল্লাহ মুমিনদের পক্ষ থেকে প্রতিরোধ করেন, তিনি কোন বিশ্বাসঘাতক, অকৃতজ্ঞকে পছন্দ করেন না।’ (সুরা হজ: ৩৮)

সাহাবী নুমান ইবন মুকাররিন রা. বলেন, রাসুলুল্লাহ সা. এর কাছে একজন ব্যক্তি আরেকজনকে গালি দিল। যাকে গালি দেয়া হল সে বলল, তোমার প্রতি অভিশাপ পড়ুক। তখন রাসুলুল্লাহ সা. বললেন-‘একজন ফিরিশতা তোমাদের দু’জনের মাঝে দাঁড়িয়ে তোমার পক্ষ থেকে উত্তর দিচ্ছিল। এ যখন তোমাকে গালি দিচ্ছিল তখন সে তাকে বলছিল, বরং তুমি, আর এ ব্যাপারে তুমি অধিক উপযুক্ত। আর যখন তুমি তাকে বললে, তোমার উপর অভিশাপ, তখন সে (ফিরিশতা) বলল, তোমার উপর পড়ুক এবং এ ব্যাপারে তুমি উপযুক্ত। (আহমাদ ২৩৭৪৫)

তাই নবীজী সা. ধৈয ধরতে বলেছেন ও অপরাধীকে ক্ষমা করতে বলেছেন। এ বিষয়ে আবদুল্লাহ ইবনু উমার রা. বলেন, জনৈক ব্যক্তি নবীজী সা.-এর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ, খাদিম (চাকর) কে কতবার মাফ করব? নবীজী সা. চুপ করে রইলেন। লোকটি আবার বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, খাদিমকে কতবার মাফ করব? তিনি বললেন, প্রতিদিন সত্তর বার। ( আবু দাউদ ৫১৬৪)

অন্য আরেকটি হাদীসে সাহল ইবন মুআয (রহঃ) তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন- ‘যে ব্যক্তি ক্রোধকে সংবরণ করে, অথচ সে কাজ করতে সে সক্ষম; (তার এ সবরের কারণে) কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তাকে সকলের সামনে ডেকে বলবেন, তুমি যে হুরকে চাও, পছন্দ করে নিয়ে যাও। (তিরমিযি ২০২১)

মন্দের উত্তরে ভালো

দুষ্টু লোকের মন্দ আচরণের উত্তর মুমিন বান্দারা কখনো মন্দ দ্বারা দেন না। তারা মন্দের বিপরীতে সদাচারণ করেন। আর এটাই প্রিয়নবীর নির্দেশ। আবুল আহওয়াস তৎ পিতা (মালিক ইবন নাযলা) রা. থেকে বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! কোন ব্যক্তির নিকট দিয়ে আমি যাই কিন্তু সে ব্যক্তি আমার মেহমানদারী করে না, সে যদি আমার নিকট দিয়ে যায় তবে কি আমি তার সাথে অনুরূপ আচরণ করে বদলা নিতে পারি? তিনি বললেন, না, বরং তুমি তা মেহমানদারী করবে। (তিরমিযি ২০০৬)

হুয়ায়ফা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, তোমরা অন্ধ অনুকরণশীল হয়ো না যে, তোমরা বলবে, লোকেরা যদি সদ্ব্যবহার করে তবে আমরাও সদ্ব্যবহার করব। আর তারা যদি অন্যায় আচরণ করে তবে আমরাও অন্যায় আচরণ করব। বরং তোমাদের হৃদয়ে এ কথা গেথে নাও যে, লোকেরা সদাচরণ করলে তো সদাচরণ করবেই এমনকি তারা অসদ্ব্যবহার করলেও তোমরা (তাদের সাথে) অন্যায়াচরণ করবে না। (তিরমিযি ২০০৭)

পাঠক, সহনশীলতার বড় দৈন্যতা চলছে মানুষের মাঝে। আমরা মানুষেরা কাউকে সামান্যতম ছাড় দিতে চাই না। খারাপ আচরণের কারণে শুধু পাল্টা খারাপ আচরণ করেই আমরা শেষ করি না, বরং আরো নিকৃষ্ট চরিত্রের অবতারণা করি। আর মন্দের বিপরীতে ভালো আচরণ করা সে তো বহু দূরের কথা! কিন্তু প্রকৃত বীর হতে হলে, সমাজের চোখে সম্মানিত ও মর্যাদাবান হতে চাইলে, পরকালে শান্তি ও নিরাপত্তা পেতে হলে, সর্বোপরি দয়াময় আল্লাহর একান্ত প্রিয়ভাজন বান্দা হতে হলে অবশ্যই আমাদেরকে সহনশীল হতে হবে। এই সহনশীলতাই আল্লাহর বিশ্বাসী মুমিন বান্দার অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য।

লেখক: ইমাম, বায়তুল আমান জামে মসজিদ (মেইন বাসস্ট্যান্ড) কালীগঞ্জ,
মুহাদ্দিস, বলিদাপাড়া মাদরাসা, কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here