যশোরঃ

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রার্থী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের বাবা যশোরের কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা কাজী রফিকুল ইসলাম।

তিনি দাবি করেছেন, ছেলে ভিন্নমতের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় ১৫ বছর ধরে পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন। পারিবারিক কোন অনুষ্ঠানেও শ্রাবণ অংশ নেননি। অথচ একটি মহল প্রচার করছে আমার পরিবারের বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ আছে। বুধবার প্রেসক্লাব যশোর মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি করেন।

লিখিত বক্তব্যে কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে আমি জেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পদক, কেশবপুর উপজেলার নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক। বিবাহিত জীবনে পাঁচ পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জনক। তারা সবাই সাবাল-সাবালিকা। আমার জ্যেষ্ঠপুত্র কাজী মুস্তাফিজুল ইসলাম মুক্তা আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রাপ্ত হয়ে নৌকা মার্কায় সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান এবং কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। দ্বিতীয় পুত্র কাজী মুজাহিদুল ইসলাম পান্না কেশবপুর উপজেলা যুবলীগের প্রাক্তন সভাপতি। তৃতীয় পুত্র কাজী মাযাহারুল ইসলাম সোনা যশোর জেলা মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। চতুর্থ পুত্র কাজী আযহারুল ইসলাম মানিক কেশবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ও কন্যা বিবাহিতা ও গৃহিনী। আমার কনিষ্টপুত্র কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৩ সালে ভর্তি হয়। তখন সে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকে ছাত্রদলের সংগঠনে জড়িয়ে পড়ে। সেই থেকে বাড়ির সঙ্গে তার যোগাযোগ কমে আসে। বার বার আমি এবং আমার পরিবারের সকলে অনেক চেষ্টা করেও ছাত্রদলের সাথে ও ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে তার সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করাতে ব্যর্থ হয়েছি। এজন্য আমার পরিবারের সদস্যরা তার সাথে সকল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করি। সেও আমাদের সাথে কোন যোগাযোগ রাখে না।

কাজী রফিকুল ইসলাম দাবি করেন, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের সাথে শুধুমাত্র বায়োলজিক্যাল রিলেশনশিপের কারণে একটি কুচক্রী মহল মিথ্যাচার করছে, যে বিএনপির রাজনীতির সাথে আমার ও আমার পরিবারের যোগাযোগ আছে। আমার পরিবার বিএনপি করে। তারা এই অভিযোগ ঢাকা পর্যন্ত করে এসেছে। যারা আমার অতীত বর্তমান জানেন না তাদের এতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে বিধায় আমি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা অবহিত করলাম।

সংবাদ সম্মেলনে কাজী রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, আমার এই সুদীর্ঘ জীবনে আমি বাঙালি জাতীয়বাদে বিশ্বাসী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে আমার আদর্শিক মেনে, ছাত্রলীগ ও স্বাধীণতার পর আওয়ামী লীগের কর্মী হয়ে একনিষ্ঠ রাজনীতি করেছি। ৭৫ পরবর্তী সরকার ক্ষমতায় এসেই তার পোষ্য বাহিনী দিয়ে আমাকে গ্রেফতার করে ১১ মাস ক্যান্টনমেন্টে আটকে রেখে সীমাহীন নির্যাতন করেও আমার নীতি আদর্শ থেকে সরাতে পারে নাই। জননেত্রী, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব গ্রহণের পর থেকেই আমির তার মহান নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের রাজনীতির মাঠে অকুতোভয় সৈনিক হিসেবে রয়েছি। জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৮৬ সালে আমাকে কেশবপুর এলাকায় আওয়ামী লীগের পক্ষে জাতীয় সংসদে নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন দেন। আমি আমার সর্বশক্তি দিয়ে নির্বাচনে ঝাঁপিয়ে পড়ি। আওয়ামী লীগের একটি সুবিধাবাদী অংশ সরাসরি আমার বিরোধিতা করায় নির্বাচনে পরাজিত হলেও আওয়ামী লীগের রাজনীতি ও গণমানুষের সেবায় আমার কর্মকা- অব্যাহত রাখি। সেই কারণেই এই বছর উপজেলা নির্বাচনকে অর্থবহ, গ্রহণযোগ্য করার মানসে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করি। নির্বাচনের পূর্বে আমি ঢাকায় আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের সাথে আলোচনা করে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। নির্বাচনে বহুবিধ প্রতিকূলতা থাকা সত্ত্বেও বিপুল ভোটে আমি জয়লাভ করেছি। সেই কারণে সুবিধাবাদী চক্রের কাছে আমি চক্ষুশূল হয়ে উঠেছি ।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কাজী রফিকুল ইসলামের ছেলে কাজী মুস্তাফিজুল ইসলাম মুক্তা, কাজী মুজাহিদুল ইসলাম পান্না, কাজী আযহারুল ইসলাম মানিক ও কেশবপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমা-ার মোহাম্মদ আলী।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here