ঝিনাইদহঃ

বিধবা চপলা রানী। আদিবাসি সম্প্রদায়ের এক সংগ্রামী নারী। স্বামী মন্টু কুমার বহু আগেই মারা গেছেন। তিন সন্তানের মধ্যে ছোট ছেলে ভারতে। বাকী দুই ছেলে আনন্দ ও অশোক কুমারকে নিয়ে বসবাস করেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুঠিদুর্গাপুর গ্রামে।

চপলা রানী “ব্লাক বেঙ্গল গট” পালন করে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন। সভ্যতার উন্নতর শিখরে মানুষ যখন আরাম আয়েশ নিয়ে ব্যাস্ত চপলা তখন এক পাল ছাগল নিয়ে ঘোরেন বনবাদাড়ে। এই ছাগল তার সন্তানের মতো। অসুখ বিসুখ হলে নিজেই ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান। তার ছাগল আছে প্রায় অর্ধশত। বাড়িতে ছাগলগুলো খেতে দিতে হয় না। সকালে নিজের দুপরের খাবার কাঁধে বেধে ছাগলের পাল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন ৬৫ বছরের চপলা। মাঠে ঘাস খেয়ে ছাগলগুলো তৃপ্ত হলেই বাড়ি ফেরেন সন্ধ্যা নাগাদ। এতে তার কোন ক্লান্তি নেই, নেই লাজ লজ্জা। এই ছাগল বিক্রি করেই ছেলেদের মাঠে জমি কিনে দিচ্ছেন চপলা। তাই এলাকাবাসির কাছে চপলা খুবই কর্মপ্রিয় একজন নারী হিসেবে পরিচিত।

এক দপুরে সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের শৈলমারী বাজারে কথা হয় চপলা রানীর সাথে। পানে চাবা দিয়ে তিনি তার ছাগল পালনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। বললেন, পরের ক্ষেতে তিনি ছাগল চরিয়ে বেড়াচ্ছেন আজ ১০ বছর। কোন সমস্য হয়নি। সবাই তাকে ভালবাসেন। তার ছাগলের পাল কারো ফসলের ক্ষতি করেন না। গান্না ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান লিটন বিশ্বাস বলেন, চপলা রানী দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ছাগল পালন করে আত্মনির্ভরশীলতার নজীর গড়ে তুলেছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here