টাঙ্গাইলঃ

ঈদযাত্রার দ্বিতীয় দিনেই সড়ক পথে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ঘরমুখীরা। উত্তরের পথে দীর্ঘ যানজটে গন্তব্যে যেতে ৮ ঘণ্টার পথ লেগেছে ২০ ঘণ্টারও বেশি।

ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইল অংশে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার দিনভর দফায় দফায় প্রায় ৪০ কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়।

বৃহস্পতিবার রাতের বৃষ্টিতে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে দেখা দেয় বড় বড় গর্ত। গাড়ির অতিরিক্ত চাপ এবং বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর সিরাজগঞ্জের দিকে গাড়ি টানতে না পারায় এই যানজট হয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ ছাড়া শুক্রবার চার দফায় বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে টোল আদায় বন্ধ থাকে। ওই সময়ে সেতুতে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রাখতে হয়।

স্বাভাবিক অবস্থায় ঢাকা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টা লাগলেও যানজটের কারণে শুক্রবার ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা লেগেছে।

বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল প্লাজা সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে শুক্রবার ভোট ৬টা পর্যন্ত সেতু দিয়ে ৩০ হাজার ৮৫৯টি যানবাহন পারাপার হয়, যা স্বাভাবিকের চেয়ে তিন গুণের বেশি।

সিরাজগঞ্জের দিক থেকে যানজট সেতু অতিক্রম করে পূর্বপ্রান্তের টোল প্লাজা পর্যন্ত চলে আসায় সকালে দু’বার এবং দুপুরে একবার টোল আদায় বন্ধ রাখতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।

শুক্রবার দুপুরে এই মহাসড়কে সরেজমিন গিয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মির্জাপুর পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার যানজট দেখা যায়।

যানজটে আটকে পড়া যাত্রীদের গরমের কারণে বাস থেকে নেমে রাস্তার পাশে গাছতলায় আশ্রয় নিতেও দেখা যায়।

টাঙ্গাইল শহর বাইপাসে যানজটে আটকে থাকা বাসচালক শরিফুল ইসলাম জানান, সকাল ৭টায় তিনি ঢাকা থেকে রওনা হয়ে ৮ ঘণ্টায় টাঙ্গাইল পর্যন্ত এসেছেন। তারপর আর গাড়ি এগোতে পারছেন না।

গাইবান্ধাগামী যাত্রী আরিফুল ইসলাম জানান, প্রত্যেকবারই যানজটে দুর্ভোগের কারণে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন না। সরকার ঈদ এলেই একই কথা বলে, বাস্তবে কোনো পদক্ষেপ নেয় না।

কুষ্টিয়াগামী হানিফ এন্টার প্রাইজে যাত্রী মাজেদুল হক জানান, তিনি শুক্রবার সকাল সোয়া ৭টায় কল্যাণপুর থেকে রওনা হয়েছেন। রাত পৌনে ১০টার দিকে তাদের গাড়ি কেবল বঙ্গবন্ধু সেতু পার হলো।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আহাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে বৃষ্টি হয়। এতে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত হয়েছে। এতে গাড়িগুলো ঠিকমতো চলতে পারছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘মহাসড়কের কয়েকটি স্থানে গাড়ি বিকল হয়। বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল বন্ধ হওয়ায় গাড়ি পার হতে না পারাতেও যানজট দেখা দেয়। হাইওয়ে পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ ও জেলা পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চেষ্টা করে যাচ্ছে।’

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here