যশোরঃ

যশোরের চৌগাছায় ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় সাপের ছোবলে তন্বী খাতুন (১৩) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে।

রোববার রাতে চৌগাছা শহরের নিরিবিলিপাড়া এলাকায় মামাবাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।

তন্বী খাতুন যশোর সদর উপজেলার চান্দুটিয়া গ্রামের তবিবর রহমানের মেয়ে। সে শহরের চৌগাছা কামিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির মেধাবী (রোল নং-১) ছাত্রী ছিল।

তন্বীর ছোট মামা মিঠু দেওয়ান জানান, রাতে লেখাপড়া শেষে মায়ের সঙ্গে নিজের ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে তন্বী। রাত ১০টার দিকে তাকে ঘরের মধ্যেই বিষধর সাপে কামড়ালেও বুঝতে পারেনি। পাশে ওর মা ঘুমিয়ে ছিলেন, তিনি বুঝতে পারেননি।

একপর্যায়ে কিছু হয়েছে বুঝতে পেরে ওই ঘরে গিয়ে দেখতে পান তার ভাগ্নির মুখ দিয়ে ফ্যানা বের হচ্ছে। হাসপাতালে নেয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়।

পারিবারের লোকজন জানান, মেয়েটি মায়ের গর্ভে থাকাবস্থায় তবিবর রহমান স্ত্রী পপিকে রেখে অন্যত্র বিয়ে করেন। সেই শোক সইতে না পেরে পপি খাতুন মানসিক ভারসম্যহীন হয়ে পড়েন। সেই থেকে পপি বাবার বাড়িতেই থাকতেন। তন্বী জন্মের পরও মায়ের মানসিক ভারসাম্য ফিরে না এলে বাবার বাড়িতেই স্থান হয় মা-মেয়ের।

লেখাপড়ায় খুবই মনোযোগী ছিল তন্বী। ক্লাসে কোনো অনুপস্থিতি ছিল না। একটু বুঝতে শিখেই তন্বী লেখাপড়া করে মানুষ হওয়ার স্বপ্ন দেখত। অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা ও সেবা করার স্বপ্ন দেখত। সে স্বপ্ন তার আর পূর্ণ হল না।

চৌগাছা কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুল লতিফ বলেন, মেয়েটি মেধাবী ও নম্রভদ্র ছিল। কোনো ক্লাস ফাঁকি দিত না। লেখাপড়া শিখে মায়ের সেবা ও সুচিকিৎসা করার স্বপ্ন ছিল তার। সেই ইচ্ছা আর পূরণ হল না।

তিনি আরও বলেন, রোববার ক্লাস শেষে উপবৃত্তির ফর্ম পূরণের জন্য অফিস সহকারীর কাছে নিজের ছবি দিয়ে যায়। কে জানতো সেই ছবি আজ স্মৃতি হয়ে যাবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here