কুষ্টিয়াঃ

বাউল শিরোমনি ফকির লালন শাহের ১২৯তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে (১৬ অক্টোবর) বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে তিনদিনের লালন স্মরন উৎসব ও গ্রামীণ মেলা। কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ায় কালীগঙ্গা নদীর তীরে লালন আঁখড়া বাড়িতে এখন সাজ সাজ রব। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সহযোগিতায় ও লালন একাডেমীর আয়োজনে এরই মধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে আয়োজক কর্তৃপক্ষ।

বুধবার সন্ধ্যায় এই উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়ে উৎসব চলবে শুক্রবার পর্যন্ত। এরইমধ্যে আখড়াবাড়িতে আসতে শুরু করেছেন লালন ভক্ত ও অনুসারীরা। উৎসবের ৩দিন লালনের আঁখড়াবাড়ির ভিতরে ও আশপাশের জায়গা গুলোজুড়ে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে বাউল ভক্ত ও অনুসারীরা গাইবেন লালনের গান। এছাড়াও লালন মঞ্চে থাকবে সারারাত গানের আয়োজন।

বাংলা ১২৯৭ সালের পহেলা কার্তিক সাধক পুরুষ লালন সাঁই দেহত্যাগ করেন। এরপর থেকে লালনের অনুসারীরা প্রতিবছর কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ার আঁখড়া বাড়িতে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে এদিনটি পালন করে আসছেন। লালন একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক সেলিম হোসেন বলেন,বিশাল এ আয়োজনের প্রস্তুতি ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। উৎসবে যোগ দিতে এরই মধ্যে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ছুটে এসেছেন সাধু-গুরু, বাউল, ভক্তরা। ছোট দলে ভাগ হয়ে দরদ ভরা গলায় গেয়ে চলেছেন লালনের গান। প্রতিবছরের তুলনায় এবার লালন স্মরন উৎসবে বাউলদের উপস্থিতি অনেক বেশী হবে বলে জানান তিনি।

লালন মাজারের খাদেম ফকির রিপন শাহ্ বলেন,উৎসব উপলক্ষে ইতিমধ্যে আসতে শুরু করেছেন লালন অনুসারি ও ভক্তবৃন্দ। উৎসবের তিনদিন লালনের আঁখড়াবাড়ির ভিতরে ও আশপাশের জায়গা জুড়ে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে থাকবেন ভক্তরা, উৎসব অঙ্গন পরিনত হবে গুরুশিষ্যর মিলন মেলায়। লালন অনুসারীরা মনে করেন লালনের অহিংসার বাণী বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে পারলেই কেবল সার্থক হবে সব আয়োজন। সাঁইজির মর্মবাণী বুকে ধারণ করে তাঁর অনুসারীরা সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে মানবতার কথা শোনান সকলকে।

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত বলেন, এতবড় আয়োজনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তিন স্তরের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। উৎসব অঙ্গন ছাড়াও শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে। আঁখড়া বাড়ির বিভিন্ন জায়গায় থাকছে সিসিটিভি ক্যামেরা।এছাড়াও নিরাপত্তার জন্য মেলার মাঠ সংলগ্ন নদীতে স্পিডবোটে পাহারার ব্যবস্থাও থাকছে।

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমির সভাপতি মো আসলাম হোসেন বলেন, প্রতিবারের ন্যায়ে এবারও সাধু-গুরু ও বাউলদের থাকা খাওয়ার সকল ব্যবস্থা সম্পন্ন করা হয়েছে। বিশাল এই আয়োজনের প্রস্তুতি ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here